উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের কারণে পদ্মায় ফের পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত চার দিন থেকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল আবারও প্লাবিত হচ্ছে। প্রতিদিনই তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকার ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি।
রাজবাড়ী
রাজবাড়ীতে পদ্মা-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ হাজার মানুষ। জেলার তিনটি পয়েন্টেই পানি এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া গেজ পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে পদ্মার পানি ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সদরের মাহেন্দ্রপুর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।পদ্মার পানিতে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর, বরাট ও খানগঞ্জ; পাংশা উপজেলার হাবাসপুর, বাহাদুরপুর; কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর এবং রতনদিয়া ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্য সংকটের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে সাপের উপদ্রব।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মার পানি বাড়ছে। এতে কয়েকটি এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে জিও ব্যাগ ফেলানো অব্যাহত রয়েছে।রাজবাড়ী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক নিউজবাংলাকে জানান, জেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৬৭টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এদের মধ্যে ৭ হাজার পরিবারকে চাল ও শুকনা খাবার সহায়তা দেয়া হয়েছে। বাকিদের রোববার ত্রাণ দেয়া হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক এস এম সহীদ নূর আকবর নিউজবাংলাকে জানান, এখন পর্যন্ত ১৬১ হেক্টর কৃষি জমিতে পানি ঢুকেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ফসলগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
মুন্সিগঞ্জ
পদ্মায় পানি বৃদ্ধিতে মুন্সিগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। জেলার ভাগ্যকূল ও মাওয়া দুটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ভাগ্যকূল পয়েন্টে ৬ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে এবং মাওয়া পয়েন্টে ৬ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমটার ওপরে রয়েছে।
জেলায় শনিবারের চেয়ে রোববারে ভাগ্যকূল পয়েন্টে পানির উচ্চতা ৫ সেন্টিমিটার ও মাওয়া পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে নদীতীরবর্তী টঙ্গিবাড়ী, লৌহজং ও সদর উপজেলার নিচু গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।