নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর ভোট না হলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে সরকারিভাবে অ্যাডহক কমিটি করে দেয়ার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে বিল পাস হয়েছে। তবে এই কমিটির মেয়াদ হবে এক বছর।
শনিবার একাদশ সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে বিলটি পাসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রস্তাব করলে স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী সেটি কণ্ঠ ভোটে নেন। পরে সেটি সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।
এর আগে শুক্রবার বিকেলেও একাদশ সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের তৃতীয় সেশনে এই প্রস্তাব তোলা হয়েছিল।
‘বাংলাদেশ লিগ্যাল প্রাকটিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১’ এই বিলটি পাসের মধ্য দিয়ে বার কাউন্সিলে নির্বাচন করা না গেলে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা যাবে।
করোনাভাইরাসের কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না করতে পারায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরিচালনার জন্য ১৫ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করে ২৮ জুলাই একটি অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি।
অধ্যাদেশ জারির পর সংসদের প্রথম বৈঠকেই সেটি উত্থাপনের নিয়ম রয়েছে। ওই অধ্যাদেশটি নিয়ম অনুযায়ী সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী। অধ্যাদেশের বিধানগুলো বিদ্যমান আইনে সংযোজন করতেই এবার সরকার বিলটি এনেছে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, তিন বছর মেয়াদের কমিটির জন্য বছরের ৩১ মের মধ্যে বার কাউন্সিলের নির্বাচন হবে। মহামারি, দৈব দুর্বিপাক অথবা অন্য কোনো অনিবার্য কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার কাউন্সিলের নির্বাচন করা না গেলে সরকার একটি ১৫ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করবে। এই কমিটির প্রধান হবেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
বিলে বলা হয়েছে, এই অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ এক বছর। এই কমিটির মেয়াদ বাড়বে না বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৮ মার্চ বার কাউন্সিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। তফসিল অনুযায়ী ২৫ মে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জরুরি সভা করে ৩ এপ্রিল বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
পদাধিকার বলে বার কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অর্থাৎ অ্যাটর্নি জেনারেল। তাকে নিয়ে ১৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি বার কাউন্সিলের।
ভোটের মাধ্যমে দেশের সনদপ্রাপ্ত প্রায় অর্ধলাখ আইনজীবী তিন বছরের জন্য ১৪ জন প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। এর মধ্যে সাধারণ সদস্য পদে সাতজন ও দেশের সাতটি অঞ্চল থেকে বাকি সাতজনকে নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত সদস্যরা তাদের মধ্য থেকে একজনকে ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
২০১৮ সালের বার কাউন্সিল নির্বাচনে ১৪ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে সরকার সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রার্থীরা ১২টি পদে এবং বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা দুটি পদে জয়ী হন।
পরে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হন। বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয় জুন মাসে।