রাজধানীর মিরপুর-১ ওয়াসা ভবন পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে ডেঙ্গু রোগ পরিবাহী এডিস মশার লার্ভা থাকার দায়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
পরে গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন তিনি।
শনিবার সকালে নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে মেয়র আতিকুল মিরপুর-১ এর ওয়াসা ভবনে যান। সেখানে পানির পাম্প ও আশপাশে সব জায়গায় এডিস মশার লার্ভা দেখতে পেয়ে সরাসরি ওয়াসার এমডিকে ফোন দেন। এসময় সেখানে গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের কথোপকথন ডিএনসিসির ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করা হয়।
পরে গণমাধ্যমকে মেয়র আতিকুল বলেন, ‘ওয়াসার মতো একটি প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক অফিসের ভেতরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য লার্ভা দৃশ্যমান থাকায় এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমেদ মজুমদারের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত, সরকারি কিংবা বেসরকারি যেকোনো ভবনেই এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
দেশে চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৬৩ । এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় অর্ধশতজনের। এ ছাড়া দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে একজনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত সাত মাসে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগস্টে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। চলতি মাসের তিন দিনে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২১ বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুর সার্বিক বিষয় নিয়ে তথ্য জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে মূলত ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সেই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় ১৪৮ জন। ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু আর কখনও দেখেনি দেশ। এর আগে ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০০২ সালে, সেবার ৫৮ জনের মৃত্যু সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ছাড়া ২০০১ সালে ৪৪ জন মারা যায়। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এবার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী।