বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমানবন্দরে ‘চরম হেনস্তা’ সংসদকে জানালেন রুমিন ফারহানা

  •    
  • ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৬:১৩

বিমানবন্দরে হেনস্তা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট করেন বলে জানান রুমিন ফারহানা। বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার ভাষায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, এই নাগরিককে দেশের বাইরে এবং দেশে প্রবেশের সময় কোনো রকমের বাধা দেয়া যাবে না, কোনো রকমের অবস্ট্রাকশন তৈরি করা যাবে না। তাকে কোনো রকমের হ্যারাস করা যাবে না।’

আদালতের রায় থাকার পরও দেশের বাইরে যাওয়ার সময় এবং দেশে প্রবেশের সময় বিমানবন্দরে ‘বীভৎস হেনস্তার’ শিকার হন বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। এর মধ্য দিয়ে নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগকে অগ্রাহ্য করছে বলেও অভিযোগ তার।

জবাবে রুমিন ফারহানার পয়েন্টটি নোট করা হয়েছে বলে জানান জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী।

সংসদে শনিবার চলমান অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিমানবন্দরে হেনস্তা হওয়ার বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন রুমিন ফারহানা।

তিনি বলেন, ‘আমার দুর্ভাগ্য গত ৭-৮ বছর ধরে যতবার আমি দেশের বাইরে যাবার চেষ্টা করেছি, আমার ভ্যালিড পাসপোর্ট, টিকিট সবকিছু থাকা সত্ত্বেও আমাকে বাইরে যেতে দেয়া হয়নি। যদিওবা আমি দু-একবার যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আমাকে যাওয়ার আগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বিমানবন্দর থানায় আটকে রাখা হয়েছে। আমার পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

‘আড়াই-তিন ঘণ্টা পর তারা ফিরে আসে, যদি ফ্লাইটের সময় থাকে আমি যেতে পেরেছি, না হলে আমি যেতে পারি নাই। এমনকি বাংলাদেশে ফেরার সময় একই ধরনের হেনস্তার শিকার ৭-৮ বছর ধরে হচ্ছি।’

এ সময় সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদের কথা তুলে ধরে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬ অনুযায়ী জনস্বার্থ ছাড়া, আইনের দ্বারা এবং যুক্তিসংগত কোনো বাধানিষেধ না থাকে তাহলে বাংলাদেশের কোনো নাগরিককে দেশের ভেতর চলাচল, দেশ থেকে বাইরে যাওয়া কিংবা আবার দেশে পুনঃপ্রবেশের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কোনো রকমের বাধা, কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে না।’

বিমানবন্দরে হেনস্তা থেকে রক্ষা পেতে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট করেন বলে জানান রুমিন ফারহানা। বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার ভাষায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, এই নাগরিককে দেশের বাইরে এবং দেশে প্রবেশের সময় কোনো রকমের বাধা দেয়া যাবে না, কোনো রকমের অবস্ট্রাকশন তৈরি করা যাবে না। তাকে কোনো রকমের হ্যারাস করা যাবে না।’

আদালতের এমন নির্দেশনা থাকার পরেও বিমানবন্দরে কেন হয়রানির শিকার হতে হয় এই প্রশ্ন রেখে রুমিন বলেন, ‘আনফরচুনেটলি এই নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আজ অবধি, এখনও যদি আমি বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করি, আমাকে একইভাবে সেই বিমানবন্দর থানায় আটকে রাখা হয়। কার নির্দেশে, কোন অধিদপ্তরের কারণে, কী কারণে- কোনো রকম কারণ আমাকে কখনও দেখানো হয়নি। এখনও আমাকে কারণ দেখানো হয় না।’

সংরক্ষিত আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমাদের সংবিধান এমনভাবে লিখিত, আইন বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের একটি ওভারল্যাপিং হবেই।…কার্যকর আইন বিভাগ পাব, সেই আশা আমরা করি না। সরকারে যেই থাকুক না কেন, সংবিধান অনুযায়ী মূলত দেখা যায় যে ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতেই ন্যস্ত। সেই অবস্থায় যদি বিচার বিভাগ একেবারে স্বচ্ছতার সঙ্গে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে, তাহলে রাষ্ট্রের টিকে থাকা, নাগরিকের টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।’

প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও কিছু ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ খুব স্পষ্ট রায় দেয় উল্লেখ করে রুমিন বলেন, ‘ন্যায়ের পক্ষে রায় দেয়, সেই জায়গাগুলোতেও যদি বিচার বিভাগের রায়কে নির্বাহী বিভাগ, প্রশাসন এইভাবে অগ্রাহ্য করে তাহলে একটা রাষ্ট্র টিকে থাকবে কীভাবে? আমরা নাগরিকরা অধিকার কীভাবে ভোগ করবে?

‘অনেক অনেক বড় বড় অপরাধী যখন খুশি দেশ থেকে চলে যান। তাদের নামে মামলা হয়, তারা পালিয়ে যান, আদালত তাদেরকে খুঁজে পায় না। তাদের ক্ষেত্রে এই বাধা আমরা দেখি না।’

বিরোধী দলের একজন নেত্রীকে কেন বারবার এমন বাধার সম্মুখীন হতে হয় সেই প্রশ্ন রেখে রুমিন বলেন, ‘সংসদ সদস্য হবার পর একটা লাল পাসপোর্ট পেয়েছিলাম। এই লাল পাসপোর্ট নিয়ে পৃথিবীর বহু দেশের বিমানবন্দরে যথেষ্ট সম্মান আমি পেয়েছি, কিন্তু বাংলাদেশ আমার নিজের দেশ, যে দেশে এই পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে আমার নামে, সেই দেশে বিমানবন্দর ত্যাগের সময় এবং আবার বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বীভৎস হেনস্তার শিকার করা হয়…।’

রুমিন ফারহানার এমন অভিযোগ শুনে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য আপনার পয়েন্টটা নোটেড, থ্যাঙ্ক ইউ।’

এরপর সংসদ অধিবেশন ১৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন স্পিকার।

এ বিভাগের আরো খবর