বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোটারদের কেন্দ্রে আনাই কি বড় চ্যালেঞ্জ

  •    
  • ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৯:৩০

স্থানীয় লোকজন মনে করছেন ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত করানোই হবে প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের মত, এই নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ নেই। মাতামাতিও নেই তেমন।

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের প্রচার শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালেই। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকাশ। শেষবারের মতো মিলিয়ে নেয়া যায় ভোটের ছক। শনিবার সকাল থেকে শুরু হবে ভোট।

প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীর মধ্যে একজন শুরু থেকেই নীরব। কোনো প্রচারে নেই। অন্য তিনজন জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

তবে স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত করানোই হবে প্রার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। যে প্রার্থী বেশিসংখ্যক ভোটার কেন্দ্রে হাজির করাতে পারবেন, তিনি এগিয়ে যাবেন লড়াইয়ে।

সিলেটের বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা- এই তিন উপজেলা নিয়ে সিলেট-৩ আসন। এখানে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার।

এই তিন উপজেলার নানা বয়সী ১০ ভোটারের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলাপ হয় বৃহস্পতিবার। তাদের মত, এই নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ নেই। মাতামাতিও নেই তেমন।

এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গত দুটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। জাতীয় নির্বাচনেই ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল সামান্য। আর এটি উপনির্বাচন। তাই সাধারণ মানুষ এই নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহী নন।

তবে এখন পর্যন্ত এই নির্বাচন নিয়ে ভীতিকর কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি বলেও জানান তারা।

ফেঞ্চুগঞ্জের একটি কলেজের শিক্ষক গৌছুল আলম বলেন, ‘প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেলেও ভোটারদের মধ্যে সেভাবে আগ্রহ নেই। এই ভোট নিয়ে মাতামাতিও কম। তবে এমনও হতে পারে, তারা হয়তো এখন নীরব আছেন। ভোটের দিন ঠিকই ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’

দক্ষিণ সুরমার একটি নির্বাচনি সভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমানের পক্ষে বক্তব্য রাখছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক

দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের প্রবীণ রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘উপনির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা কম। নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের নিরুৎসাহও তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া বিএনপি ভোটে নেই। এসব কারণে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। এখন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা যত বেশিসংখ্যক ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে পারবেন, ততই তাদের জয়ের পাল্লা ভারী হবে।’

এই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে লড়ছেন হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা শফি আহমদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া। জুনায়েদ শুরু থেকেই মাঠে নীরব। তবে আটঘাট বেঁধে মাঠে তৎপর ছিলেন অন্য তিন প্রার্থী।

তিনজনই বলছেন, ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ আছে। তবে তাদের কেন্দ্রে আনতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

এই আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ১৪৯টি। ভোটের দিন ভোটারদের আনতে কেন্দ্রভিত্তিক আলাদা কমিটি করেছে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ। বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় এ ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন শফি আহমদ চৌধুরী। ব্যক্তি ইমেজই তার একমাত্র ভরসা।

দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নের জান আলী শাহ আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন দলটির মহানগর শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত।

তিনি বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভোট নাগরিকদের অধিকার। আমরা আশা করছি, মানুষজন তাদের এই অধিকার প্রয়োগ করতে ভোটকেন্দ্রে আসবেন। আমরাও ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করতে কাজ করছি।’

উপনির্বাচনের শেষ পথসভায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমানের পক্ষে ভোট চাইছেন দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু

লাঙল প্রতীকের প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ আছে। তারা ভোট দিতে চায়। এখন দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের। ভোটারদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে হবে।’

আতিক অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। যাতে তারা ভোটকেন্দ্রে না আসেন। বলা হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রে ঝামেলা হবে। এমন ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করলে তো মানুষ ভোট দিতে আসবে না। কেউই খামাখা ঝামেলায় জড়াতে চায় না।

‘এ রকম ভীতির পরিস্থিতি তৈরি করলে আজকে যেমন বিএনপি নির্বাচনে আসছে না, আগামী দিনে হয়তো জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে আসবে না। ফলে নির্বাচন কমিশন আর প্রশাসনকেই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’

মোটরগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী মনে করেন, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে জনগণ অবশ্যই ভোটকেন্দ্রে আসবে। কারণ মানুষ তাদের রায় জানাতে চায়।

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ায় নিজেই নিজের জন্য ভোট চাইছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী। শেষ নির্বাচনি সভায় তিনি ছিলেন দক্ষিণ সুরমার দাউদপুর চৌধুরী বাজারে

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ যদি দেখে তারা ভোট দিলেও কোনো লাভ হবে না, তাদের রায় ছিনিয়ে নেয়া হবে, তাহলে আর মানুষজন কেন্দ্রে আসবে না।’

নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে বিপুল উৎসাহ রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আমি যেখানেই গিয়েছি বিপুল সাড়া পেয়েছি। মানুষ খুব আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আশা করছি ভোটের দিনও এটা অব্যাহত থাকবে।’

সিলেটের নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ নেই জানিয়ে সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, ‘আমরা আশা করছি, মানুষজন ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের রায় প্রদান করবেন। কোথাও কোনো ভয়ভীতির পরিবেশ নেই।’

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১১ মার্চ মারা যান সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

আসনটিতে গত ২৮ জুলাই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ আদালত নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দেন। এই উপনির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট হবে।

এ বিভাগের আরো খবর