অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে মরিয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল নানা ধরনের অপপ্রচার রটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসব ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে কাদের বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে মরিয়া বিএনপি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। তাই বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিনিয়ত মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে।
‘আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চেতনায় বিশ্বাসী সকল মানুষকে বিএনপি নেতৃবৃন্দের এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে জানিয়ে কাদের বলেন, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে নতুন নির্বাচন কমিশন।
বিএনপি এখন থেকেই পরবর্তী নির্বাচন বানচালের ফন্দি আঁটছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। তিনি বলেন, একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সার্চ কমিটির মাধ্যমে বাছাই করে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
কাদের বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে খুনি জিয়া-মোশতাক চক্র অবৈধ ও অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল।’
দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেও জানান কাদের।
তিনি বলেন, ‘আজ যখন দেশে গণতান্ত্রিক কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ভিত্তি সুসংহত, তখন গণতন্ত্র হত্যাকারী বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি অত্যন্ত লজ্জাকর।’
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জের ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপির আন্দোলনের অংশ। অর্থাৎ বিএনপি নির্বাচনে জেতার লক্ষ্যে নয়, নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল।’
কাদেরের মতে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন ছিল। ওই নির্বাচনে বিএনপিসহ দেশের সকল রাজনৈতিক দলও অংশগ্রহণ করে।
কাদেরের মন্তব্য, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হওয়া এবং সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের কারণে বিএনপি জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি জনগণের ওপর দায় চাপায়।
তিনি বলেন, ‘নিজেদের পরাজয় আড়াল করার লক্ষ্যে নির্লজ্জভাবে তারা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদগার করে আসছে। মূলত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির ওপর শুরু থেকেই বিএনপির কোনো আস্থা নেই।‘
বিএনপি দেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছিল জানিয়ে কাদের বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধ, অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে নির্বাচন ও নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছিল। এর পর যতবারই বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে ততবারই তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ও অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে।’