বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট নওশাদ আতাউল কাইউমের দাফন হয়েছে।
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বৃহস্পতিবার বিকেলে বোন ও মায়ের কবরে সমাহিত করা হয় তাকে। তার আগে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা হয়।
স্বজনরা জানান, বনানী কবরস্থানে মা নাসিমুস সুবা মুকুল ও বোন রাবেয়া খাতুন মিমুকে দাফনের জায়গায় সমাহিত করা হয় পাইলট নওশাদকে।
মাত্র এক বছর বয়সে ১৯৮০ সালে মারা গিয়েছিল নওশাদের বোন মিমু। তখন তাকে সমাহিত করা হয় বনানী কবরস্থানে। সেই কবরে পরে ২০১২ সালে সমাহিত করা হয় তাদের মাকে। বৃহস্পতিবার মায়ের কবরেই নওশাদকে সমাহিত করা হয়।
নওশাদের বাবার বন্ধু ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজিদ জানান, বেলা তিনটায় বনানী কবরস্থানে নওশাদের দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর মায়ের কবরে সমাহিত করা হয় তাকে।
নওশাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দাফনের পূর্ব মুহূর্তে সেখানে পৌঁছান চিত্রনায়ক ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘ওর জানাজায় অংশ নিতে পারিনি। তাই এখানে ছুটে এসেছি।’
নওশাদের কবরের পাশে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান ফেরদৌস।
দুপুরে বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকার সামনে পাইলট নওশাদের প্রথম জানাজা হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে মরদেহ নেয়া হয় বনানী কবরস্থানে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকর্মী, স্বজন, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
ভারত থেকে দেশে আনার পর পাইলট নওশাদের মরদেহ উত্তরার বাসায় ছিল দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত। এরপরই নেয়া হয় কর্মস্থল বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইনসের কার্যালয়ে।
নওশাদের মরদেহ বৃহস্পতিবার সকালে দেশে আনা হয়। ভারতের নাগপুর থেকে বিমানের বিজি-০০২৬ ফ্লাইটে সকাল ৯টা ১১ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ আনা হয়।
গত শুক্রবার সকালে ওমানের মাসকাট থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে ঢাকায় ফেরার পথে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন নওশাদ। এ সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি ভারতের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ১২৪ জন। পরে জানা যায়, নওশাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
ওই রাতেই বিকল্প পাইলট ও ক্রু পাঠিয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। আর নওশাদকে ভর্তি করানো হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে।
হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসাধীন থাকা ক্যাপ্টেন নওশাদকে সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ একটি ফ্লাইট নিরাপদে অবতরণ করিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হন পাইলট নওশাদ। বিজি-১২২ ফ্লাইটটিতে ১৪৯ যাত্রী, ৭ ক্রু ও দুজন কো-পাইলট ছিলেন। বলতে গেলে নওশাদের দক্ষতায় বেঁচে যায় তাদের জীবন।