ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘তার মৃত্যু এই উপমহাদেশের বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। তিনি আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। বাংলাদেশের প্রতি তার সমর্থন ও ভালোবাসার জন্য আমরা তাকে স্মরণ করব।’
মঙ্গলবার প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে ‘প্রণব মুখোপাধ্যায় লিগ্যাসি ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত প্রথম প্রণব মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশের একজন সত্যিকারের বন্ধু এবং উপমহাদেশের একজন মহান রাজনৈতিক আইকন ছিলেন। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে এই মহান ব্যক্তিত্বের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান কখনও ভোলার নয়।’
স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন তরুণ সাংসদ হিসেবে প্রণব মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য ১৯৭১ সালের জুন মাসে রাজ্যসভায় একটি প্রস্তাব পেশ করে সেটি গ্রহণ করানোর জন্য সাহসী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ কৃতজ্ঞতার সাথে তার সমর্থনের কথা মনে রেখেছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অসীম ও গভীর শ্রদ্ধা ছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারত সরকার তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ‘ভারতরত্ন’ প্রদান করেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অমূল্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তাকে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা (মুক্তিযুদ্ধ সম্মান) প্রদান করা বাংলাদেশের জন্য একটি সম্মানের বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের একটি বর্ণময় রাজনৈতিক কর্মজীবন ছিল। তিনি তার অসাধারণ প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য পরিচিত ছিলেন। তার এবং তার স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং খুব প্রিয় স্মৃতি রয়েছে, যিনি বাংলাদেশের মেয়ে ছিলেন।
‘প্রণব দাদা এবং শুভ্রা দিদির আমার এবং আমার বোন রেহানার প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা এবং অন্য ১৮ জন ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর ভারতে আমাদের কঠিন দিনগুলিতে তারা অভিভাবক এবং পারিবারিক বন্ধু হিসেবে আমাদের পাশে ছিলেন।’
তিনি জানান, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু তার এবং তার পরিবারের জন্য একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি। তিনি তাকে এবং তার স্নেহের অভাব বোধ করতে থাকবেন।
স্মারক বক্তৃতায় আরও অংশ নেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু।