অন্যের ফেসবুক আইডির একটি পোস্ট নিজের আইডিতে শেয়ার করা মামলায় চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (বহিষ্কৃত) এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সদস্য মো. শাহজাহান শিশিরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আসামির জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শাহজাহান শিশিরের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল মজুমদার বলেন, ‘মামলাটিতে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশিরকে হাইকোর্ট ছয় সপ্তাহের জামিন দেন। এরপর তাকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
‘আদেশ অনুযায়ী আসামি আত্মসমর্পণ করেছিলেন। কিন্তু আদালত জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্য একজনের একটি পোস্ট তিনি তার আইডিতে অসাবধানতাবশত শেয়ার করেছিলেন। যে বিষয়ে পোস্টটি ছিল, ওই সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি মামলা করেন নাই। দুঃখজনকভাবে এই আসামিকে জেলে যেতে হলো।’
২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর মেহেদী হাসান মেরিন নামের একজন আইনজীবী ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন।
ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি ধানমন্ডি থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। ওই অনুযায়ী ধানমন্ডি থানা অভিযোগটি এহাজার হিসেবে গ্রহণ করে।
মামলায় চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান শিশিরকে ১ নম্বর এবং যিনি পোস্টটি দিয়েছিলেন সেই জুয়েল সরকারকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালের ২৪ জুলাই চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির একটি পোস্ট তার ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন, যা দিয়েছিলেন ২ নম্বর আসামি জুয়েল সরকার। ওই পোস্টের বক্তব্য ছিল, ‘দেশে কোটি কোটি টাকা লুট হচ্ছে, অথচ খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকা লুটের জন্য জেলে!! আবার শাহজাহান শিশির ন্যায় হোক আর অন্যায় হোক প্রকৌশলীর গায়ে হাত তোলায় বহিষ্কার!!
‘এই দেশে কি কোনো ক্ষমতাবান ক্ষমতা দেখায় না? প্রশ্ন হলো, দেশের বিচার করে কে, আর কচুয়ার বিচার করে কে? ও মাগো কত ঢংয়ের বিচার হচ্ছে এই দেশে... থাক বেশি কিছু লিখলে কার আবার চুলকানি বেড়ে যাবে। কারণ এই দেশে উচিত বলা এখন অনুচিত!!’
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আসামিরা এ বক্তব্য পোস্ট ও শেয়ার করে দেশের সরকার ও বিচারব্যবস্থাকে বিষোদগার করেছেন। একই সঙ্গে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন।
২০২০ সালের ১৯ জুলাই কচুয়ায় সরকারি শহীদ স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন বহুতল একটি ভবনের কাজের মান নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী নূর আলমকে মারধর করেন শাহজাহান শিশির।
ওই ঘটনার চার দিন পর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চেয়ারম্যান শিশিরকে বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া ওই প্রকৌশলী শিশিরের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় এবং রফিকুল ইসলাম নামের আরেকজনের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গত বছরের ২৫ আগস্ট চাঁদপুরের আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। পরে তিনি জামিন পান।