বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হলমার্ক কেলেঙ্কারি: পুলিশ পায়নি আসামি, খুঁজে পেল ‘চাঁদাবাজ’

  •    
  • ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২১:০২

হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলায় পলাতক থাকায় মালেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় গত ২৫ জানুয়ারি। ঢাকার বিশেষ জজ-১-এর বিচারকের জারি করা আদেশে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয় কাফরুল থানার পুলিশকে। পরে থানা থেকে আদালতকে বলা হয়, তারা মালেককে খুঁজে পায়নি।

হলমার্ক কেলেঙ্কারি মামলার আসামি আব্দুল মালেককে পুলিশ খুঁজে না পেলেও তাকে খুঁজে পেয়েছে একদল চাঁদাবাজ, যারা মূলত গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় দিয়ে টাকা আদায় করত।

এই চক্রের সদস্যরা মালেককে অপহরণ করে কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। বিষয়টি র‌্যাবকে জানায় মালেকের পরিবার। বাহিনীটি মঙ্গলবার উত্তরার একটি আবাসিক হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করে।

তাকে অপহরণের অভিযোগে ইকবাল হোসেন ও আমিরুল ইসলাম নামে দুজনকে আটকও করা হয়। এরপর মালেকের পরিচয় জানতে পেরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানান বাহিনীর মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘তারা মালেককে ব্ল্যাকমেইল করতে বেশ কয়েক দিন তথ্য সংগ্রহ করেছিল। তিনি কখন উত্তরখানে আসবেন, তখন অপহরণ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছিল তারা। ঘটনার দিন দুপুরে মালেক উত্তরখানে তার আত্মীয়র বাসায় গেলে পরিকল্পনাকারীরা সেখানে যায়। এ সময় তারা এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে।’

তিনি বলেন, ‘চাঁদা পরিশোধ না করলে তার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে হলমার্ক কেলেঙ্কারি বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে হুমকি দেয়। পরে মালেককে উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর স্বজনদের কাছে ফোন করে দাবি করা কোটি টাকা, চেক ও স্ট্যাম্প নিয়ে আসতে বলা হয়।’

হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলায় পলাতক থাকায় মালেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় গত ২৫ জানুয়ারি। ঢাকার বিশেষ জজ-১-এর বিচারকের জারি করা আদেশে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয় কাফরুল থানার পুলিশকে। পরে থানা থেকে আদালতকে বলা হয়, তারা মালেককে খুঁজে পায়নি।

হলমার্ক কেলেঙ্কারির মামলার আসামি আব্দুল মালেককে র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়

হলমার্ক মামলার আসামি আব্দুল মালেক বিষয়ে র‌্যাব পরিচালক বলেন, ‘তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যাংকের ঋণখেলাপি। সে সময় যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা হয়েছিল, তার মধ্যে তার কোম্পানিও ছিল। হলমার্ক মামলার তিনি একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তাকে থানায় সোপর্দ করার ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওনার (মালেক) বিরুদ্ধে মামলাটি অন্য থানায় হলেও তার বাসা আমাদের থানা এলাকায়। আমরা নিয়মিতই খোঁজ করছিলাম, তিনি সেখানে যাওয়া-আসা করেন কি না বা থাকেন কি না। কিন্তু আমরা তাকে পাইনি। আজ র‌্যাব থেকে জানানো হয়েছে তাকে আটক করা হয়েছে।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম মেয়াদে সোনালী ব্যাংক থেকে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়ায় হলমার্ক গ্রুপ। সেই ঘটনায় ১২টি মামলায় ৫৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলার একটিও নিষ্পত্তি হয়নি এখনও।

এসব মামলায় আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, সেটি র‌্যাব জানাতে পারেনি।

সাংবাদিক পরিচয়ে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজি

র‌্যাব জানায়, মালেককে অপহরণের অভিযোগে যাদের আটক করা হয়েছে, তারা এলাকায় এশিয়ান টেলিভিশন, প্রাণের বাংলাদেশ, স্বাধীন সংবাদ, বিডব্লিউ নিউজ, প্রথম বেলা, ডেইলি নিউজসহ আরও কয়েকটি সংবাদপত্রের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন।

হলমার্ক মামলার পলাতক আসামিকে অপহরণ করে কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে আটক দুজন

এসব গণমাধ্যমের পরিচয় দিয়ে তারা বিভিন্ন আসামি ও সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা রয়েছে।

ইকবাল হোসেন ও আমিরুলের কাছ থেকে একটি ক্যামেরা, টিভি মাইক্রোফোন, তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প, দুটি ব্যাংকের চেক (একটি ৪৫ লাখ ও একটি ৫০ লাখ টাকা), নগদ ৫ লাখ ৫ হাজার ১৬০ টাকা ও অন্যান্য নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।

সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজ দলে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য আছে বলে আটক দুজন র‌্যাবকে জানিয়েছেন।

ইকবালের কাছে এশিয়ান টেলিভিশনের পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বেসরকারি ওই টেলিভিশনে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগে ইকবালকে কয়েক মাস আগে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর