সুনীল অর্থনীতির (ব্লু ইকোনমি) বিকাশে প্রচলিত ও অপ্রচলিত মৎস্য এবং সীউইডের পরিচর্যার মধ্য দিয়ে রপ্তানি বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বুধবার আয়োজিত ‘উপকূলীয় মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা: সুনীল অর্থনীতি ও রূপকল্প ২০৪১ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্রে থাকা জলজ সম্পদ তথা প্রচলিত বা অপ্রচলিত মাছ, সীউইড সঠিকভাবে সংগ্রহ করতে পারলে এগুলো বহির্বিশ্বে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় যোগান হবে। সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে হলে প্রচলিত মৎস্য, অপ্রচলিত মৎস্য এবং সীউইডকে পরিচর্যা করে এ ক্ষেত্রকে উপযুক্ত করে নিয়ে আসতে হবে। সামুদ্রিক এ মৎস্যসম্পদ আমাদের খাদ্য ও পুষ্টির যোগানের পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘বেস্ট ডিপ্লোমেসির’ মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্রসীমায় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই সমুদ্র আমাদের সুনীল অর্থনীতির সবচেয়ে বড় সম্ভার।’
দেশকে সমৃদ্ধ করতে হলে আমাদের অর্থনীতিকে জাগ্রত করতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনীতিকে জাগ্রত করতে আমাদের সম্পদ রপ্তানি করতে হবে। এজন্য সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে হবে। সুনীল অর্থনীতিকে কার্যকর করতে হবে। আর এ কাজে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।’
শ ম রেজাউল বলেন, ‘একসময় নানা কারণে দেশে মাছের সংকট দেখা দিয়েছিল। মাছ দুর্লভ হয়ে গিয়েছিল, হারিয়ে যাচ্ছিল। সে জায়গা থেকে গবেষণা ও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ৩১ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছ আমরা ফিরিয়ে এনেছি।’
সরকারের সঠিক ভূমিকা ও ব্যবস্থাপনার কারণে মাছের উৎপাদন বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
সরকার গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় মাছ অহরণে প্রকল্প নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ইলিশ ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চল, পার্বত্য অঞ্চলসহ ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে স্থান উপযোগী প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। মৎস্য খাতে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।’
উপকূলীয় মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হতে পারে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি হতে পারে, খাবারের বড় জোগান তৈরি হতে পারে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হতে পারে। এ জন্য মৎস্যসম্পদের উন্নয়নে সবাই মিলে কাজ করতে হবে।’
গবেষণায় জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্যখাতে যারা গবেষণা করছেন, বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করছেন, মাঠে কাজ করছেন এবং যারা ব্যবস্থাপনা করছেন তাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। তাদের নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্রকে ধারণ করতে হবে, দায় নিতে হবে।’
বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার ও মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক।