শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠক পেছাল। আগামী রোববার হবে বৈঠকটি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বুধবার বৈঠকটি হওয়ার কথা ছিল। অনিবার্য কারণে তা পেছানো হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
‘দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে গেছে। সে ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেয়া যায় সে সংক্রান্ত আমরা কিছু পরিকল্পনা তৈরি করেছি। বৈঠকে আমরা তা উপস্থাপন করব। এসব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর সকল সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ ১০ শতাংশের নিচে নামলে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বার খুলে দেয়া হতে পারে।’
গত ২৬ আগস্ট আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যেতে পারে। তার আগে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন তার তথ্য ছক আকারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠাতে হবে। তার মধ্যে কতজন টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, আর কতজন এক ডোজ নিয়েছেন, আবাসিক হলের কতজন শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছেন এ সংক্রান্ত তথ্য ইউজিসিতে পাঠাতে হবে।
এরপর গত রোববার ইউজিসি থেকে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়ে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি।
দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী বিশেষ করে শিশুদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন মনোচিকিৎসকরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
আর শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সব প্রস্তুতি তাদের আছে। করোনা পরিস্থিতি আর একটু নিয়ন্ত্রণে এলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের ৪ কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ভাষ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যত বেশি সময় বন্ধ থাকবে, ততই বাড়বে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা।
দেশে করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদ। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।