মহাশ্বেতা দেবীর কোনো ছোট গল্প স্থান পাবে না দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রমে। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদারকি কমিটি।
কমিটির এই ‘রাজনৈতিক’ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের অন্তত ১৫ জন সদস্য। পাশাপাশি তদারকি কমিটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হয়েছে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান।
উল্লেখ্য সম্প্রতি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের তদারকি কমিটি স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রমে বেশ কিছু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। যে পরিবর্তন মেনে নিতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বড় অংশ। একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫ জন সদস্য তদারকি কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভিন্নমত জানিয়ে পাঠানো একটি নোটে বলেছেন, ‘তদারকি কমিটি সর্বদা দলিত, আদিবাসী, নারী এবং যৌন সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মনোভাব দেখিয়েছে, যা পাঠ্যক্রম থেকে এই ধরনের সব কণ্ঠস্বরকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পিত চেষ্টায় স্পষ্ট।’
সম্প্রতি মহাশ্বেতা দেবী, দলিত তামিল লেখিকা বামা ফেস্টিনা সুসাইরাজ এবং সুকীর্থরানির লেখা পাঠ্যক্রম থেকে সরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তদারকি কমিটি। কমিটি হঠাৎ করে ইংরেজি বিভাগকে মহাশ্বেতা দেবীর বিখ্যাত ছোটগল্প ‘দ্রৌপদী’ কোন যৌক্তিক কারণ না দেখিয়ে সরিয়ে ফেলতে বলেছে। শুধু তাই নয়, কমিটি মহাশ্বেতা দেবীর অন্য ছোটগল্পও পাঠ্যক্রমে রাখতে চাইছে না।
একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা অন্যান্য কোর্সের উপাদান পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও তাদের মতবিরোধ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছিল, একটি ডিসিপ্লিন নির্দিষ্ট ইলেকটিভ পেপার, ‘ইন্টারগোটিং কুইরনেস’ শিরোনামে, তদারকি কমিটি ওই পেপার থেকে নির্বিচারে অনেকটা অংশ মুছে ফেলেছে। প্রাক-ঔপনিবেশিক ভারতীয় সাহিত্য শিরোনামের আরেকটি ডিসিপ্লিন নির্দিষ্ট ইলেকটিভ পেপারে, তদারকি কমিটি ইংরেজি বিভাগকে চন্দ্রাবতী রামায়ণের পরিবর্তে তুলসীদাস রামায়ণ পড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের ফলে মহাকাব্য রামায়ণের একটি ‘নারীবাদী পাঠ’ পাঠ্যক্রম থেকে অপসারিত হবে।