জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের দিকে চেয়ে আছে সারা দেশের মানুষ। এটা সরকারের জন্য একটি অগ্নিপরীক্ষা। এই পরীক্ষায় সরকারকে অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হবে। তা না হলে দেশ চরম সংকটের মধ্যে পড়বে। সেই সংকট কাটিয়ে সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না।
মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে নগরের মিরাবাজার এলাকার একটি হোটেলে জেলা জাতীয় পার্টির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বাবলু বলেন, বর্তমানে দেশে শুধু সরকারি দল নির্বাচন করছে। আর কোনো দল নির্বাচনে আসছে না। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসার কারণ হচ্ছে, সরকার যাতে বারবার একই ভুল না করে। তারপরও সরকার ভুল করে যাচ্ছে। ভোট কারচুপি করতে করতে সাধারণ মানুষের কাছে ভোটের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই মানুষ আর ভোট দিতে আসে না।
সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশব্যাপী একটা উদাহরণ তৈরি হোক। যাতে মানুষ ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ হয়। দীর্ঘদিনের ভোট কারচুপির ধারাবাহিকতা বন্ধ করে জনগণের সেই ধারণা পাল্টানোর সুযোগ রয়েছে এই নির্বাচনে।
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মাঝে অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনে মাত্র ৩ ও ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এটা একটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আমাদের দেশে গণতন্ত্র খুব মুমূর্ষু অবস্থায়। সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে সিলেট-৩ আসনের নির্বাচন দিয়ে মুমূর্ষু গণতন্ত্রকে সতেজ করতে হবে। তা না হলে দেশে আর গণতন্ত্র থাকবে না।’
আগামী ৪ সেপ্টেম্বর সিলেট-৩ আসনে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক। উপ নির্বাচন নিয়েই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বাবলু।
বাবলু আরও বলেন, ‘সিলেটের এই নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ব্যালটের মাধ্যমে যে ফলাফল হোক আমরা মাথা পেতে মেনে নেব। কিন্তু মানুষ যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে সে নিশ্চয়তা সরকার নিশ্চিত করতে হবে। ভোট মানুষের সাংবিধানিক অধিকার এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। তবে আমরা শঙ্কিত। কারণ মাঠের অবস্থা কী সেটা নতুন করে বলার নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাঠোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) রানা মো. সোহেল, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান, হুইপ পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সিলেট-৩ আসনের জাপার দলীয় প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব এটিইউ তাজ রহমান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, জাপা নেতা, সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া, ক্রীড়া সম্পাদক এবং জাতীয় যুবসংহতির সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীনসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।
করোনা আক্রান্ত হয়ে এ বছরের ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। করোনার কারণে কয়েকদফা পিছিয়ে যায় এই আসনের উপ নির্বাচন।
এতে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলটির জেলা কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক, বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (সম্প্রতি বহিষ্কৃত) সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া।