বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে মন্ত্রীরা মিথ্যাচার করছেন মন্তব্য করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রিন্স বলেন, ‘বর্তমান ভোটারবিহীন নিশিরাতের সরকার বুঝতে পেরেছে—তাদের ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশের মানুষ এতটাই জর্জরিত ও অতিষ্ঠ যে জনগণ পরিত্রাণ লাভের আশায় প্রহর গুণছে।’
প্রিন্স বলেন, “বর্তমান শাসকগোষ্ঠী এখন দ্বিগবিদিক জ্ঞানশুন্য হয়ে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে। পাশাপাশি এখন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে তারা। নতুন করে তার মরদেহ, সমাধি এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান নিয়ে আপত্তিকর, নির্মম, নিষ্ঠুর ও ঘৃন্য মিথ্যাচার শুরু করেছে। আসলে শহীদ জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে শহীদ জিয়ার মরদেহ, সমাধি ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান নিয়ে অশালীন ও ঘৃনিত বক্তব্য দেয়ার পর থেকে আওয়ামী মন্ত্রী-নেতারা অতি উৎসাহে এ বিষয়ে মিথ্যাচার শুরু করেছে।”
তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে শহীদ জিয়ার মরদেহ নিয়ে আওয়ামী মন্ত্রী-নেতাদের মধ্যে রুচিহীন বক্তব্য প্রদানের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যার বক্তব্য যত ঘৃণ্য ও অসত্য হবে তাকে যেন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। এসব আওয়ামী লীগ প্রযোজিত ও পরিচালিত নষ্ট রাজনীতির উপাদান মাত্র। এসব বক্তব্য থেকে জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, সরকারের পায়ের নীচের মাটিটুকুও আর অবশিষ্ট নেই।’
তিনি বলেন, ‘এসব অবান্তর, রুচিহীন মিথ্যাচার করে প্রকারন্তরে তারা মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহেই এবং তাঁর ‘গুডবুকে’ থাকার জন্যই পারিষদবর্গ এধরনের পাগলের প্রলাপ বকছেন। দেশের মানুষ যেন এক হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রীদের রাজত্বে বসবাস করছে। চলিতেছে সার্কাস। হায় সেলুকাস!’
প্রিন্স বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের এই লাগামহীন মিথ্যাচার ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের অন্তর্নিহিত কারণ জনগণ ভাল করেই জানে। দেশ পরিচালনায় তাদের সীমাহীন ব্যর্থতা, গণতন্ত্র-ভোটাধিকারসহ মৌলিক মানবাধিকার হরণ, গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, মামলা-হামলাসহ ভয়াবহ দুঃশাসন, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ও লুটপাটকে আড়াল করতে এবং করোনা মোকাবেলা, টিকা সংগ্রহে ব্যর্থতা, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা, চিকিৎসা সংকট ইত্যাদি থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই এ ধরনের মিথ্যাচারের নেশা পেয়ে বসেছে বর্তমান গণধিকৃত সরকারকে।
তিনি বলেন, জিয়া উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের মরদেহ পেলে নাকে খত দেবেন, ‘মরদেহের ডিএনএ টেস্টসহ শহীদ জিয়ার মরদেহ কবর থেকে সরানো হবে বলে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন সেই বক্তব্যকে আমরা কী বলে আখ্যায়িত করব কিংবা সেটির বিরুদ্ধে কী ভাষায় কথা বলবো তা জানতে হলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতাদের নিকট প্রশিক্ষণ নেয়া ছাড়া আমাদের উপায় নেই।’