পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মরিয়ম বেগম। তার বাড়ি পশ্চিম টিকিকাটা গ্রামে। স্বামী জাকির হোসেন তাকে জামিনদার করে ব্যবসার জন্য একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। একে একে উপজেলার বিভিন্ন এনজিও থেকে নেন মোটা অঙ্কের টাকা।
গোপনে বিক্রি করে দেন সব জমিজমা। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে মঠবাড়িয়া থেকে পালিয়ে যান। জাকির ও তার প্রথম স্ত্রী মরিয়মের বিরুদ্ধে পিরোজপুর অর্থ ঋণ আদালতে এনজিওর পক্ষ থেকে মামলা হয়।
স্বামী ছেড়ে চলে যাবার পর মাথা গোঁজার ঠাঁই হারান মরিয়ম। আশ্রয় নেন নানা বাড়িতে। তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে বাসাবাড়িতে কাজ নেন তিনি।
এনজিওর করা মামলায় আদালত থেকে সম্প্রতি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় স্বামী-স্ত্রীর নামে। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। মরিয়ম আছেন এলাকাতেই।
সোমবার মঠবাড়িয়া থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জেন্নাত আলী, উপ সহকারী পুলিশ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও লাবনী আক্তার মরিয়মের বাড়িতে যান।
মরিয়মকে থানায় নেয়ার সময় তার সন্তানরা কাঁদতে শুরু করে। তারা বলতে থাকে ‘আমরা এখন থাকব কীভাবে, খাবো কী, ঘরে তো কিছুই নেই। আমাদের মাকে ছেড়ে দেন, মা কিছু করে নাই।’
বাচ্চাদের এসব কথা শুনে ভীষণ কষ্ট পান এএসআই জাহিদ। মনে মনে ঠিক করেন ওদের জন্য কিছু করার।
মরিয়মকে থানায় রেখে মঠবাড়িয়া বাজার থেকে চাল, ডাল, তেল, আলু, লবণ, সাবানসহ এক মাসের বাজার-সদাই কেনেন। পরে সেসব নিত্য পণ্য নিয়ে এএসআই জাহিদ হাজির হন মরিয়মের বাড়িতে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মরিয়মের সংসারে যে অবস্থা, তার অবর্তমানে পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা খাবার তুলে দেয়ার কেউ নেই। তাই যতদিন তিনি হাজতে থাকবেন, ততদিন তার পরিবারকে সহায়তা করে যেতে চাই।