মানিকগঞ্জ পৌরসভায় মার্কেট নির্মাণের জমি নিয়ে পৌর মেয়র ও জেলা পরিষদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। পৌরসভার দাবি করে মেয়র মার্কেট নির্মাণ শুরু করলেও জেলা পরিষদ জানিয়েছে জমিটি তাদের।
এ নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জেলা পরিষদ। এ ছাড়া টেন্ডার ছাড়া সড়কের উন্নয়ন কাজ করায় পৌর মেয়র রমজান আলীর বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
টেন্ডার ছাড়া উন্নয়ন কাজের কথা স্বীকার করলেও মার্কেটের জায়গা পৌরসভার বলে দাবি করেছেন মেয়র। তবে জমির কোনো দলিল দেখাতে পারেননি তিনি।
জেলা পরিষদের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৫৫ নম্বর পশ্চিম বান্দুটিয়া মৌজার আরএস ২ নম্বর খতিয়ানের ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই জমি জেলা পরিষদের জানিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে বলা হয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষকে।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কার্যালয় থেকে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে সাতটি প্যাকেজের আওতায় পৌরসভার বিভিন্ন রাস্তার উন্নয়ন করার কথা ছিল। গত ৭ জুন এ নিয়ে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৫৮ টাকার সাতটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ দরপত্রের শিডিউল কেনার শেষ তারিখ ছিল ৩০ জুন। ১ জুলাই ছিল দরপত্র জমা দেয়ার দিন।
পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দরপত্র জমা দেয়ার তারিখ শেষ হওয়ার আগের অন্য প্রতিষ্ঠান দিয়ে রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ পৌরসভায় মার্কেট নির্মাণ বন্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠি
অনিয়মের বিষয় মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘টেন্ডার ছাড়াই বেশ কয়েকটা রাস্তার উন্নয়ন কাজ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তদন্ত শেষে গত মাসে প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’
জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা দূর-রে শাহওয়াজ অভিযোগ করেন, পৌরসভার বেওথা এলাকায় জেলা পরিষদের জায়গায় মার্কেটটি নির্মাণ করছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কাজ বন্ধ রাখতে লিখিতভাবে জানানোর পাশাপাশি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই জায়গায় কাঁটাতারের বেড়াও দেয়া হয়েছিল।
তবে মেয়র তার লোকজন দিয়ে কাঁটাতার উঠিয়ে ফের কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, মন্ত্রণালয় একটা ব্যবস্থা নেবে।
টেন্ডার ছাড়াই কাজ করার কথা স্বীকার করে পৌর মেয়র রমজান আলী বলেন, ‘পৌরবাসীর ভোগান্তি ও বন্যার কথা বিবেচনা করে পৌর এলাকার কয়েকটি রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে।’
মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘ওটা পৌরসভার জায়গা। আমি ছাড়ব না, কাজও বন্ধ করব না। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছিল, সেটা আমি ছিঁড়ে ফেলেছি।’
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ জানান, এ জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়ায় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে।