রাজধানীর কলাবাগানে সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় পলাতক মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল জিয়াসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর এ বিষয়ে সন্তোষ বা অসন্তোষ জানাননি জুলহাস মান্নানের স্বজনরা।
এদিন রায়ে কী হয় শুনতে আদালতে এসেছিলেন জুলহাজ মান্নানের ভাই মিনজাহ মান্নান ইমন ও তনয়ের মামা মাহফুজুর রহমান খান।
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে জাইলে জুলহাজ মান্নানের ভাই মিনজাহ মান্নান ইমন বলেন, ‘ঘাতকরা আমার অজ্ঞাত। আমি কাউকে চিহ্নিত করে সুনির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারিনি। তাই রায়ে সন্তোষ বা অসন্তোষ প্রকাশের অবকাশ আমার নাই।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল যারা পুরো প্রক্রিয়ায় যুক্ত থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন, এক্ষেত্রে তাদের মতামত নেয়াই ভালো হবে।’
মিনহাজ মান্নান বলেন, ‘আমার ভাইকে অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্তরা নির্মমভাবে হত্যা করে। আমি তদন্ত করে অপরাধীদের শনাক্ত, গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত বিচার চেয়ে মামলা করি। দীর্ঘদিন পর আজ রায় হয়েছে।’
রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল খুনের শিকার হন ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়।
নিহত জুলহাজ বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন। তনয় নাট্য সংগঠন লোক নাট্যদলের শিশু সংগঠন পিপলস থিয়েটারে জড়িত ছিলেন।
ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করেন।
হত্যা মামলাটির আসামি করা হয় আটজনকে। ২০১৯ সালের ১২ মে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম।
গত বছরের ১৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়।
মঙ্গলবার আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অপর পাঁচ আসামি হলেন আকরাম হোসেন (পলাতক), মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
পলাতক দুই আসামি সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়।