এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বল্পোন্নত- এলডিসি দেশগুলোর জন্য অবকাঠামো নির্মাণে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এ জন্য এলডিসি দেশগুলোর শক্তিশালী নীতি ও সহায়ক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সুইজারল্যান্ডের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে জেনেভায় এলডিসি এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল রিভিউ বৈঠকে বাংলাদেশের এ অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে দোহায় এলডিসির পঞ্চম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনকে সামনে রেখে জেনেভায় রিভিউ বৈঠক শুরু হয়েছে সোমবার থেকে; শেষ হবে ২ সেপ্টেম্বর।
মোমেন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এলডিসি দেশগুলোর বিশেষ করে দারিদ্র্য হ্রাস এবং মানবসম্পদ ও অবকাঠামো বিনিয়োগে অগ্রগতির প্রশংসা করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল, সাহসী এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, ‘দেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলারে পৌঁছেছে, দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ।’
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস ও ড. মোমেনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কোভিড টিকার প্রাপ্যতা, সামর্থ্য ও ন্যায়সংগত বিতরণ নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার ওপর জোর দেন।
ড. মোমেন কোভিড ভ্যাকসিন, ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা যন্ত্রপাতি তৈরিতে সাময়িক কর মওকুফের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিক্স, ডায়াগনস্টিকস ও অন্যান্য চিকিৎসা যন্ত্রপাতি উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের সামর্থ্যের কথাও তুলে ধরেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে বাংলাদেশে মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের ওপর কমিউনিটি ক্লিনিকের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে অবহিত করেন এবং এ ধরনের আরও ক্লিনিক স্থাপনের জন্য ডব্লিউএইচওর সহায়তা চান।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন স্বাস্থ্য খাতের মূলধারায় মানসিক স্বাস্থ্য এবং অটিজম সমস্যা সামনে নিয়ে আসার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
অন্যদিকে ইউএনএইচসিআরের মহাপরিচালক ফিলিপো গ্র্যান্ডির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মোমেন বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সহযোগিতার অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার অসাধারণ মানবিক সিদ্ধান্তের জন্য গ্র্যান্ডি বাংলাদেশ সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ডব্লিউআইপিওর মহাপরিচালক ড্যারেন ট্যাংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশের আইপি সেক্টরকে শক্তিশালী করতে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মসৃণ গ্র্যাজুয়েশন ও ভিশন ২০৪১ অর্জনের জন্য ডব্লিউআইপিওর বিশেষ সহায়তা ও সুবিধা চান।
মোমেন এবং ট্যাং উভয়েই একমত হয়েছেন যে, মেধাসম্পদ উন্নয়নের হাতিয়ার হওয়া উচিত ক্ষুদ্র শিল্প। নারী উদ্যোক্তা ও যুবকদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে কাজ করা উচিত।