‘স্বচ্ছতার বন্ধন’– এই স্লোগান সামনে রেখে করোনার মধ্যে যাত্রা শুরু করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড (এসএফআইএল)।
মহামারির এ সময়েও অর্থায়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তারা। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর কার্যক্রম শুরু করলেও মাত্র চার মাসেই লাভের মুখ দেখে প্রতিষ্ঠানটি।
এক বছরে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আমানতের পরিমাণ ৪১৯ কোটি টাকা। এ সময় বিনিয়োগ ১০৬ কোটি টাকা। উৎপাদন ও রপ্তানিমুখীসহ বিভিন্ন খাতে ঋণ দেয়া হয়েছে ৬৭ কোটি টাকা। অতি সতর্কভাবে ঋণ বিতরণ করায় প্রতিষ্ঠার এক বছরেও বিতরণকৃত ঋণের এক টাকাও খেলাপি হয়নি প্রতিষ্ঠানটির।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতেজা আহমেদ খান বলেন, ‘ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহক ভালোভাবে যাচাই করে ঋণ দিয়েছি। করোনার কারণে পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না। অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে রপ্তানিমুখী শিল্প, ভৌত অবকাঠামো, হোম লোন, গাড়ি লোনসহ বিভিন্ন কাজে অর্থায়ন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নন পারফর্মিং লোন (এনপিএল) শূন্য। আমরা দেখেশুনে ফাইন্যান্স করছি। একটু বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছি। আমানতকারীরা টাকা ফেরত চাইলে যেন সঙ্গে সঙ্গে সেটা দিতে পারি। এটাই আমাদের পরিকল্পনা। আমানত সুরক্ষা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।’
করোনার মধ্যে যাত্রা শুরু করে স্ট্র্যাটেজিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের পরিসর দিন দিন বাড়ছে। ভালো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে থেকে অর্থের সংস্থান নিশ্চিত করায় তৈরি হয়েছে সম্ভাবনা।
ইতিমধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের আওতায় একটি বিদেশি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাবারের পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে একত্রিত হয়ে কাজ করছে এসএফআইএল।
এসএফআইএলের ৯৮ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার প্রাতিষ্ঠানিক। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ কানাডা ও আমেরিকার সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) রয়েছে। আর বাকি ২ শতাংশ ব্যক্তিকেন্দ্রিক। ফলে সুশাসন ও ব্যবস্থাপনা পরিধি নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়।
স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রাহক পর্যায়ে সেবা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এসএফআইএল। আমানতের টাকা ফেরত দেয়ার ক্ষমতা, আর্থিক সচ্ছলতা, ব্যবস্থাপনা দক্ষতার কারণে ক্রেডিট রেটিংয়ে ‘এ-প্লাস’ অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
টেকসই প্রযুক্তি সুবিধার মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছানোর পরিকল্পনা এসএফআইএলের।
প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, সেবার প্রক্রিয়াগুলো তারা অটোমেটেড করতে চান। গ্রাহক পর্যায়ে ব্রাঞ্চ নয়, প্রযুক্তিগত সুবিধার মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ানো হবে। সে ক্ষেত্রে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার পরিকল্পনা আছে।
এসএফআইএল শাখা খোলার আগে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার খুলবে। ঢাকা শহরকে চারটি জোনে ভাগ করে দুটি বিজনেস সেন্টার খোলার মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে তারা। গ্রাহকদের পক্ষ থেকে ভালো সাড়া পাওয়ার পর শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।