নাগরিক ঐক্যের প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো প্রকল্পগুলো মানুষের মন ভোলানোর জন্য। করোনার টিকা আনতে না পারলে এই উন্নয়ন দেশের মানুষের জন্য কাজ হবে না।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় এই মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কট্টর সমালোচক মান্না। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে এই আলোচনার আয়োজন করে ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন।
আগের দিন ঢাকার প্রথম মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক যাত্রা উদ্বোধন করা হয়েছে। যদিও যাত্রী পরিবহন আরও সোয়া এক বছরের মতো লাগবে, তার পরেও তীব্র যানজটে ভুগতে থাকা রাজধানীবাসী বেশ উচ্ছ্বসিত এই প্রকল্পটি নিয়ে। দল বেঁধে বহু মানুষ মেট্রোরেলের সেই পরীক্ষামূলক যাত্রা দেখতে গেছে।
মান্না বলেন, ‘মানুষকে ভুলিয়ে দেয়ার জন্য এখন আমাদের কাছে ট্রামের গল্প করা হচ্ছে। গত দুই দিন ধরে ঢাকা মহানগরে শুধু মেট্রোরেলের কাজ চলছে। আমি এর বিপক্ষে না, কিন্তু আমি কি জিজ্ঞেস করতে পারি, আপনারা মেট্রোরেল নিয়ে বলতে পারেন, কিন্তু বলতে পারেন না যে আগামী সাত দিনের মধ্যে টিকা আসবে কি না? কত দিনের মধ্যে দেশের ১২ কোটি মানুষকে টিকা দিতে পারবেন?
‘পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল করতে পারবেন কিন্তু টিকা আনতে পারবেন না, ওই উন্নয়ন দেশের মানুষের জন্য চলবে না।’
মান্না বলেন, ‘আপনি উন্নয়নের কথা বলবেন আর ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মানুষ গুম করে ফেলবেন আর খবরও দেবেন না, ওই রকম রাষ্ট্র আমরা চাই না।’
সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের নেতা বলেন, ‘সত্যি সত্যি যদি আপনাদের হারিয়ে যাওয়া মানুষের খোঁজ চান তাহলে আমরা খোঁজ দেয়াতে সরকারকে বাধ্য করব। আর সে জন্য যে কর্মসূচি দেয়া লাগে আমরা দেব। সব মানুষকে এক করেন। তারপর আমরা প্রেস ক্লাব থেকে বের হয়ে রাস্তায় বসে পড়ব।’
গুম নিয়ে তিনি বলেন, ‘দুঃখের বিষয়, ওই খবর দেয়ার পরিবর্তে এই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, গুম এ দেশে হয় না। ওরা নিজেদের দুঃখে কষ্টে, পাওনাদারের চিন্তায় অন্য কোথাও চলে যায়। এ দেশে গুমটুম হয় না।
‘জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটি ৩৪ জনের তালিকা দিয়ে বলেছে- এই মানুষগুলোর খোঁজ চাই। ওরা খোঁজ দিতে পারেনি। পারেনি মানে তারা জানে কিন্তু সেটা বলার মতো নয়। সেটা বললে এই সরকার থাকে না, এই দেশ থাকে না, এই রাষ্ট্র থাকে না।
‘এত বড় হৃদয়হীন পাষণ্ড এরা। আপনারা জিজ্ঞেস করেন- প্রধানমন্ত্রীর কানে কি ঢোকে না? কথা তো ঢুকেই। উনি এক কান দিয়ে নেন আরেক কান দিয়ে বের করে দেন।’