বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘নওশাদের শূন্যতা অনুভব করবে বিমান’

  •    
  • ৩০ আগস্ট, ২০২১ ১৮:০৫

শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী পাইলট নওশাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে সোমবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো জয়। শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী পাইলট নওশাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

নওশাদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও সচিব মোকাম্মেল হোসেনও।

বিমান প্রতিমন্ত্রী শোকবার্তায় বলেন, ‘ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম ছিলেন একজন দক্ষ পাইলট। তিনি দায়িত্ব পালনকালে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন। কর্মজীবনের বিভিন্ন সময়ে তিনি তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তার মতো একজন অভিজ্ঞ পাইলটের মৃত্যুতে বিমান দীর্ঘদিন শূন্যতা অনুভব করবে।’

ক্যাপ্টেন নওশাদ বিমান বাংলাদেশের সম্পদ ছিলেন উল্লেখ করে বিমানসচিব বলেন, ‘দক্ষতার জন্য আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। তার মতো একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ পাইলটের মৃত্যু প্রতিষ্ঠানের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’

ভারতের নাগপুরের একটি হাসপাতালে কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন নওশাদকে সোমবার বেলা ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। দুপুর পৌনে ২টায় নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুব।

তিনি বলেন, ‘ক্যাপ্টেন নওশাদের ভ্যান্টিলেশন বেলা ১১টার দিকে খুলে দেয়া হয় এবং তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার মরদেহ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।’

নওশাদ আর বেঁচে নেই বলে রোববারই সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন এ সংবাদ উড়িয়ে দিয়ে বিমানের এমডি ড. আবু সালেহ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে জানান, নওশাদের চিকিৎসায় যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, সেখান থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। বোর্ডের সিদ্ধান্ত আসলে জানাতে পারবেন।

গত শুক্রবার সকালে ওমানের মাসকাট থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে ঢাকায় ফেরার পথে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন নওশাদ। এ সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।

এমন পরিস্থিতিতে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি ভারতের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ১২৪ জন। পরে জানা যায়, নওশাদের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।

ওই দিন রাতেই বিকল্প পাইলট ও ক্রু পাঠিয়ে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। আর নওশাদকে ভর্তি করানো হয় নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে।

কিংসওয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেস পরিচালক ডা. সুভরজিৎ দাশগুপ্ত, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিশিয়ান ডা. রঞ্জন বারোকার ও ডা. বীরেন্দ্র বেলেকারের অধীনে চিকিৎসা চলছিল নওশাদের। তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন তিনি।

ক্যাপ্টেন নওশাদের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল সরকার থেকে। সরকার তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়।

এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ঝুঁকিপূর্ণ একটি ফ্লাইট নিরাপদে অবতরণ করিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হন পাইলট নওশাদ। বিজি-১২২ ফ্লাইটটিতে যাত্রী ছিলেন ১৪৯ জন, ক্রু ছিলেন ৭ জন এবং কো-পাইলট ছিলেন ২ জন। বলতে গেলে নওশাদের দক্ষতায় বেঁচে যায় তাদের জীবন।

ওই বিমানটিও ওমান থেকে বাংলাদেশে এসেছিল। বিমান বাংলাদেশের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি মাসকাট থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে উড়াল দেয়ার পর সেখানকার কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ক্যাপ্টেন নওশাদকে জানানো হয়, রানওয়েতে টায়ারের কিছু অংশ পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত বিমানের এয়ার ক্রাফটের হতে পারে।

পাইলট নওশাদ যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নওশাদ বিমানটি চট্টগ্রামে না নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালালে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন।

অবতরণের আগে ক্ষতিগ্রস্ত টায়ারের বিষয়ে নিশ্চিত হতে রানওয়ের ওপরে দুইবার লো-লেভেলে ফ্লাই করেন নওশাদ। তখন দেখা যায়, উড়োজাহাজের পেছনের ২ নম্বর টায়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এটি নিশ্চিত হওয়ার পর দক্ষতার সঙ্গে ফ্লাইটটি নিরাপদে অবতরণ করেন নওশাদ। এই কৃতিত্বে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি। তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনপত্র পাঠায় আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশন।

এ বিভাগের আরো খবর