করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমে এলেও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু।
৩০ দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২-এ। এ সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ৯০ ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে সোমবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৩৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্য ১০ হাজার ৯০।
গত জানুয়ারিতে ৩২ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বছর শুরু হয়েছিল। জুনে এটা ১৭২ জনে ওঠে। জুলাই মাসে সেটিই হয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৮৬ জনে। তাতে সব মিলিয়ে এ বছরের প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গুতে মোট শনাক্ত দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৮ জন। জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। আগস্টে এসে চিত্রটি উদ্বেগজনক হয়ে পড়েছে। আগস্টের ৩০ দিনে ডেঙ্গু রোগী দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৩২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সোমবার থেকে বিকেলে জানানো হয়, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে শুধু ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হয়েছে ২১৩ জন। অন্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে ২০ জন।
চলতি বছর এ নিয়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হলো ১০ হাজার ৯০ জনের শরীরে। এসব রোগীর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৮ হাজার ৮৯৬ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ১৫০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক হাজার ৪ ডেঙ্গু রোগী।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত সাত মাসে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ৩০ দিনে ৩০ জনের মৃত্যু হয়।
গত ২১ বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুর সার্বিক বিষয় নিয়ে তথ্য জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে মূলত ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সেই বছর এক লাখের বেশি মানুষকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় ১৪৮ জন। ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু আর কখনও দেখিনি দেশ। এর আগে ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০০২ সালে। সেবার ৫৮ জনের মৃত্যু সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ছাড়া ২০০১ সালে ৪৪ জন মারা যায়। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এবার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী।