আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গুমের সংস্কৃতি চালু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ কেমন দেশ, কেমন রাষ্ট্র, কেমন সরকার আমরা বানালাম যেখানে আমাদের সন্তানেরা নিখোঁজ হয়ে যাবে। যাদের হদিস খুঁজে পাওয়া যাবে না এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তাদের তুলে নিয়ে যাবে, সরকার তার কোনো জবাব দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘গুম শব্দটি বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত ছিল না। এই ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই গুম কথাটি চালু হয়েছে। যারাই একটু প্রতিবাদী সচেতন, তাদেরকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য এবং গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য যখনই আন্দোলন শুরু হয়েছে তখনই আন্দোলনকারীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, গুম করে দেয়া হয়েছে। সরকারের কাছে গেলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গেলে তারা বলেন, আমরা কিছুই জানি না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ৮-৯ বছর ধরে আমাদের পাঁচ শর বেশি নেতা-কর্মী গুম হয়ে গেছে। গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর মেয়ে এখনও দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে কখন তার বাবা ফিরে আসবে। তার বাবা ফিরে আসে না। এই যে ছোট ছোট বাচ্চাদের আহাজারি আপনারা শুনলেন, আমরা তো আমাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। অসহায়ত্বের একটি বেদনা, যন্ত্রণা আমাদেরকে কুরে কুরে খায়। আমরা এখান থেকে মুক্তি চাই। আমরা অবশ্যই আমাদের এই মানুষগুলোকে ফিরে পেতে চাই। পরিবার তাদের যেন ফিরে পেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে বারবার আমরা আহ্বান করেছি। তারা গেল কোথায় খুঁজে বের করার দায়িত্ব আপনাদের। পরিবারের কাছে তাদের ফিরিয়ে দিন। তাদের অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনাদের জবাব দিতে হবে। জনগণের আদালতে আপনাদের বিচার করা হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বেআইনিভাবে অবৈধভাবে গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাদের সংবিধানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। গোটা প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। আজকে সে জন্য আমাদের উচিত হবে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে সরিয়ে রাজনৈতিকভাবে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।’
বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোরশেদ আলম ও সাবেক ছাত্রনেতা সেলিনা সুলতানা নিশীতা।