সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি আরও দুই সেন্টিমিটার বেড়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে পৌর এলাকার আরও কিছু গ্রাম। পানিতে এখন তলিয়ে আছে পাঁচ উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি দুই সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এতে নতুন করে পানি ঢুকেছে পৌর এলাকার বেশ কিছু অংশে। এ ছাড়া চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে ভাঙছে নদী।
এসব অঞ্চলের শ শ একর ফসলি জমি এখন পানিতে নিমজ্জিত।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম নিউজবাংলাকে জানান, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় ২৮টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম। এর মধ্যে ৩৮২টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার্তদের ১৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে।
কাজিপুর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামের মজনু শেখ বলেন, ‘আমরা যমুনা নদীর মাঝে বসবাস করি। বন্যার পানিতে সবার আগে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হই। এবার ভাদ্রের বানে আমার চার বিঘা জমিতে ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে। গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়ার কোনো জায়গা নাই। তাই এখানেই পড়ে আছি পানির মধ্যে। এখনও কোনো ত্রাণসহায়তা পাইনি।’
চৌহালী উপজেলার চর সলিমাবাদ গ্রামের জাফর সরকার বলেন, ‘বাপ-দাদার ভিটা কুড়ি বছর আগেই যমুনা নদী খেয়ে ফেলেছে। অনেক কষ্ট করে এখানে একটা বাড়ি করেছিলাম। সেটাও আজ যমুনা গিলে খাইলো।
‘আগুনে পুড়ে গেলে ভিটা থাকে, কিন্তু নদীতে ভেঙে গেলে কিছুই থাকে না। আমরা ত্রাণসহায়তা চাই না। চাই তীর রক্ষা বাঁধ। এখন ছেলেমেয়ে, বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে কোথায় যাব, কোনো জায়গা খুঁজে পাচ্ছি না।’
জেলা প্রশাসক ফারুক আহম্মেদ জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত সব পরিবারই ত্রাণের আওতায় আসবে।
তিনি জানান, বন্যা দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুত রয়েছে। এরই মধ্যে শাহজাদপুরে ৫ টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কাজিপুরে দেয়া হয়েছে ১০ টন চাল ও ১ লাখ টাকা। অন্য উপজেলাগুলোতে পাঠানো হয়েছে ১২ টন চাল ও ১ লাখ টাকা।