বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ঘরর সামনে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্বপ্নের মতো লার’

  •    
  • ২৯ আগস্ট, ২০২১ ২০:৩৮

সৌদি প্রবাসী মো. হারুন বলেন, ‘বছর, দু বছর শেষে দেশত সফর আয়ি। তখন আরত্তুন চিটাং শহরর নামা পইত্ত কিন্তু এহন কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান অয়ে। এহন অক্কল সোজা সৌদি আরবত্তুন কক্সবাজার আসা যাওয়া গইয়্যুম।’

‘ঘরর সামনে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্বপ্নের মতো লার। আগে বিদেশত্তুন আত্মীয় যাইলে আইলে ঢাকা, চিটাগাং যা পইত্ত কিন্তু এখন সুজা ঘরর দোয়ারত বিদায় দিয়ুম, রিসিভ গইজ্জুম।’

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের লক্ষ্যে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রানওয়ের সম্প্রসারণকাজ উদ্বোধন করেন।

এতে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন কক্সবাজার শহরের নতুন বাহাড়ছড়া এলাকার সাজ্জাদ হোসেন।

রেলপথের পর এবার কক্সবাজারের মানুষ পাচ্ছে সাগর ছোঁয়া বিমানবন্দর।

শুধু সাজ্জাদ হোসেনই নন, কক্সবাজারের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়ে প্রকল্পের উদ্বোধনে নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

কক্সবাজারের বাংলাবাজার এলাকার মো. হারুন ১০ বছর ধরে সৌদি প্রবাসী।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বছর, দু বছর শেষে দেশত সফর আয়ি। তখন আরত্তুন চিটাং শহরর নামা পইত্ত কিন্তু এহন কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান অয়ে এহন অক্কল সোজা সৌদি আরবত্তুন কক্সবাজার আসা যাওয়া গইয়্যুম।’

আরেক প্রবাসী মনিরুল আলম মনির বলেন, ‘আইজ্জা টিভিত হবর চাইয়ি ঢাকা শহরর মতত কক্সবাজার বিমানবন্দর অর, তাও বিদেশি স্টাইলে, যহন দেশেত আইয়্যুম তহন আর চিন্তা নাই। প্রবাসীরা আর ঢাকা-চিটাং নয়, আরা এহন সোজা বিমানবন্দরত্তু ঘরত আইয়্যুম।’

কক্সবাজারের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানের করার প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বেবিচক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৯ হাজার ফুট দীর্ঘ রানওয়েকে ১০ হাজার ৭০০ ফুটে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ ফুট থাকবে সমুদ্রের মধ্যে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করতে বঙ্গোপসাগরের তলদেশে ব্লক দিয়ে বাড়ানো হচ্ছে রানওয়ে।

প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেবিচক। এই নির্মাণকাজের দায়িত্ব পেয়েছে চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান।

৫ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ ও শক্তি বৃদ্ধি, এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপনের কাজ চলমান।

সাগরের মধ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণ করতে প্রথমে সাগরের নিচে স্থাপন করা হবে জিও টিউব, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে পানি। শুরু হবে খনন-প্রক্রিয়া ও বালু ভরাট কার্যক্রম।

এরপর প্রাথমিক পর্যায় থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে হবে বালুর স্তরবিন্যাস। চূড়ান্ত পর্যায়ে হবে রানওয়ের জন্য বালুর স্তরবিন্যাস। তারপর হবে পাথুরে স্তরবিন্যাস ও নিশ্ছিদ্রকরণ, পিচঢালাই ও নিশ্ছিদ্রকরণ। এভাবেই তৈরি হবে রানওয়ে ও প্রাথমিক সমুদ্র থেকে রক্ষাকারী বাঁধ। এর পরপরই হবে রানওয়ের শোভাবর্ধন ও নির্দেশক বাতি স্থাপন।

সমুদ্র তলদেশে ব্লক তৈরি করে এর ওপর স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। দেশে এই প্রথম কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে এই প্রক্রিয়ায়।

বেবিচক বলছে, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ঘিরে তৈরি হবে এভিয়েশনের হাব। সারা বিশ্ব থেকে সুপরিসর বিমান কক্সবাজারে ওঠানামা করাতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরিদুল মোস্তফা বলেন, ‘কক্সবাজারের সঙ্গে আগে দেশের মানুষের যাতায়াতের দুয়ার খোলা ছিল। আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গোটা পৃথিবীর জন্য কক্সবাজারের দুয়ার খুলে দিয়েছেন। এজন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জানান, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের মাধ্যমে কক্সবাজারের জন্য একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। সমুদ্রে নির্মিত রানওয়েতে যখন পর্যটকবাহী বিমান অবতরণ করবে তখন মনে হবে এটি কক্সবাজার নয়, যেন হংকং।

জেলা সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা জানান, কক্সবাজারে চলমান কর্মযজ্ঞের মধ্যে এই বিমানবন্দরের প্রকল্প অন্যতম। এর মাধ্যমে এই এলাকার ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীরা শুধু আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে নয়, নানাভাবে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।

এ বিভাগের আরো খবর