চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে তার মরদেহ রয়েছে কি না সে প্রশ্ন তুলেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও। বলেছেন, কফিনে জিয়ার মরদেহ থাকুক না থাকুক দলটি এখন পলিটিক্যালি ‘ডেড’।
রাজধানীর বারডেম হাসপাতাল অডিটরিয়ামে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড তদন্তে কমিশন গঠন করলে জিয়ার কফিনে কী ছিল তাও জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন খালিদ মাহমুদ। বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত কমিশন দরকার। জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত জানা দরকার। তাহলে জানা যাবে কফিনে কী আছে।’
১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তাকে সমাহিত করা হয় সেখানেই। পরে সেখান থেকে সরিয়ে জিয়ার দেহাবশেষ চন্দ্রিমা উদ্যানে সমাহিত করার কথা জানানো হয় বিএনপি থেকে। দেহাবশেষ কফিনে করে আনা হয়েছিল, কিন্তু কফিনের মুখ তখন খোলা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোক দিবসের আলোচনায় সভায় কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীও। জানান, চন্দ্রিমায় জিয়াউর রহমানের কোনো মরদেহ নেই। এটা বিএনপিও জানে।
প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ বলছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জানান, চন্দ্রিমায় যে জিয়ার মরদেহ রয়েছে সেই সাক্ষী প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। নিজের কাঁধে জিয়ার মরদেহ বহন করেছেন সে সময়ের সেনা অধিনায়ক।
জিয়ার মরদেহ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কফিনে জিয়ার লাশ সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর তথ্যভিত্তিক বক্তব্যকে মির্জা ফখরুল হাস্যকর বলছেন। তার চিকিৎসা করানো দরকার। কফিনে ডেডবডি থাক বা না থাক, বিএনপি পলিটিক্যালি ডেডবডিতে পরিণত হয়ে গেছে।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে। সেই সময়ে যারা বেঁচেছিলেন তারা পরবর্তীতে অস্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। সেগুলো এখন বড় প্রশ্ন। কাজেই সেটারও একটা রহস্য উদঘান করা দরকার।’
রাজনীতিবিদ-আমলা দ্বন্দ্ব ‘ষড়যন্ত্র’
সরকারকে বেকায়দায় ফেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে একটি পক্ষ রাজনীতিবিদ ও আমলাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরির ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করতে কিছু মতলববাজ সরকার ও সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি করার চেষ্টা করছে; যেন সরকারের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন যেন না হয় সেজন্য সরকারের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দ্বন্দ্ব তৈরি করতে মতলববাজরা মাঠে নেমেছে।’
সেসব ‘মতলবাজদের’ চিহ্নিত করে রাখতে হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (মতলববাজরা) আমাদের সঙ্গেই আছে। আমাদের সঙ্গে থেকেই তারা ছুরিকাঘাত করতে চায়।’