করোনাভাইরাস মহামারির বছরে দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের আয় কমে গেছে।
নির্বাচন কমিশনে রোববার দুপুরে জমা দেয়া নিরীক্ষা হিসাবে এ তথ্য জানিয়েছে টানা দুই যুগের বেশি ক্ষমতায় থাকা দলটি। একটি স্বনামধন্য নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান এই হিসাব তৈরি করেছে বলে জানায় আওয়ামী লীগ।
ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান।
আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের জানান, ২০২০ সালে দলটির আয় হয়েছে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩৩ টাকা। ২০১৯ সালে দলটি আয় করেছিল ২১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা। এই আয় ২০১৯ সালের চেয়ে ১০ কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা কম। যা শতকরা হিসেবে ৫১ শতাংশ কম।
আয় কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ২০২০ সালে মনোনয়ন ফরম বিক্রি বাবদ আয় আগের বছরের চেয়ে কম হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৯ সালে আয়ের একটি প্রধান কারণ ছিল দলটির ত্রি-বার্ষিকী কাউন্সিল।
নিরীক্ষায় আয়ের প্রধান খাত হিসেবে দেখানো হয়েছে বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের দেয়া চাঁদা, মনোনয়ন ফরম বিক্রি, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেয়া অনুদান।
আবদুস সোবহান গোলাপ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের হিসাব উল্লেখ করে জানান, ২০২০ সালে করোনার বছরে আওয়ামী লীগের ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩১ টাকা। এই ব্যয় ২০১৯ সালের চেয়ে বেড়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫৬ টাকা। এই ব্যয় ২০১৯ সালের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।
২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতিতে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা, বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় প্রার্থীদের দেয়া অনুদান, পত্রিকা-প্রকাশনা ও সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় বেড়েছে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া অফিস রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সংগঠন পরিচালনা, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনায় মূল ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটির এই নেতা।
২০২০ সাল শেষে আওয়ামী লীগের জমার পরিমাণ ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার ৬০১ টাকা। আগের বছরে এই স্থিতি ছিল ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯৩ টাকা।
সেই স্থিতি ২০২০ সালে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫০ কোটি ৭৩ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৪ টাকা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের বছর ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছিল ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। আর ব্যয় হয়েছিল ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা।