দেশে করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস)।
ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি ও সিজিএস শনিবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সেন্টার ফর জেনোসাইডের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘দেশের দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতি সপ্তাহে সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।’
‘দেশে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের একটি বড় অংশ এখনও থেকে যাচ্ছে পরীক্ষা নিরীক্ষার বাইরে। যা বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। এছাড়া এই উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পরিসংখ্যান কেউ রাখছে না। কী পরিমাণ উপসর্গ নিয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে সেটা জানতেই এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা।’
করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এই মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি দ্রুত পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলছেন, দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পর সীমান্ত এলাকা করোনা সংক্রমণ বেড়ে যায়। যে কারণে হয়তো রাজশাহী জেলাতে এই সংক্রমণ বেশি হয়েছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ৮ মার্চ থেকে দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৯২৬ জনে।
তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য বিভাগের আজকের তথ্য অনুযায়ী করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৯ জনের দেহে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা উপসর্গ নিয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন রাজশাহীতে ৫৫৮ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল। সেখানে ৩৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৭৩ মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে আছে সাতক্ষীরা জেলা আর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বগুড়া জেলা। এই জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ময়মনসিংহ জেলায় ৩১৯ জন, কুমিল্লা জেলায় ২৫৩ জন, চাঁদপুর জেলায় ২২৩ জন, ফরিদপুর জেলায় ১৯২ জন, খুলনা জেলায় ১৮২ জন এবং চট্টগ্রাম জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেশে করোনা সংক্রমণের চিত্রও উঠে এসেছে। দেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১০ জেলায়। শীর্ষে আছে ঢাকা জেলা। এই জেলায় ৬ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫৪ জনের দেহে করোনা সংক্রমিত হয়েছে। ৯৫ হাজার ৩৪৪ জনের করোনা শনাক্ত নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম জেলা। আর ৩০ হাজার ৫৪০ জন শনাক্ত নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে সিলেট।
এছাড়াও যথাক্রমে রাজশাহী জেলায় ২৬ হাজার ২৩০ জন, খুলনা জেলায় ২৬ হাজার ২৩ জন, কক্সবাজার জেলায় ২০ হাজার ৫০৬ জন, ফরিদপুর জেলায় ১৯ হাজার ৯৪৪ জন, কুষ্টিয়া জেলায় ১৬ হাজার ৮৭৪ জন, মুন্সিগঞ্জ জেলায় ১১ হাজার ৪১৪ জন এবং রাজবাড়ী জেলায় ৯ হাজার ৯৫০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।