আফগানিস্তানে ১৫ বাংলাদেশি নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ হলেও দেশটিতে অবস্থানরত ১৫ বাংলাদেশি নিরাপদে আছেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিস) শনিবার সকালে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড বাংলাদেশ: অ্যান এপিক অফ আ ন্যাশনস ইমার্জেন্স অ্যান্ড ইম্যান্সিপেইশন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও ওয়েবিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
আফগানিস্তানে থাকা ১৫ বাংলাদেশি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যিনি অ্যাম্বাসেডর ইন তাসখন্দ, উনি জানিয়েছেন যে ওরা সেইফ আছে। বাট ভয়ে এয়ারপোর্টে যাচ্ছেন না। সো উই ডোন্ট নো, সো আপনাদের যদি কোনো বুদ্ধি থাকে, আপনারা তো বেশি বুদ্ধিমান লোক, বলেন, কীভাবে আমরা ওদের রেসকিউ করতে পারি?’
তাদের উদ্ধারে সরকার কোনো চার্টার্ড বিমান পাঠানোর পরিকল্পনা করছে কি না, জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘ডিটেইল আমি বলতে পারব না। আই ক্যান্ট সে, আই ডোন্ট নো। অবস্থার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এয়ারপোর্টে কোনো কোনো বাংরাদেশি এসে দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশি নয়, তারা আফগান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন, আমরা কয়েক সপ্তাহ আগে প্রাইভেটলি যারা ওখানে, ওই দেশে আছেন তাদের বলেছিলাম, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা সেইফ জায়গায় চলে যান। অনেকেই এটা গ্রহণ করেছেন। কারণ আমাদের ধারণা ছিল যে, সমস্যা হতে পারে। যেহেতু আমাদের ওখানে অ্যাম্বাসি নাই, সুতরাং মোর ডিফিকাল্ট হবে।’
অনেকেই সরকারের এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন বলে জানান মোমেন। বলেন, ‘কেউ কেউ শুনেছেন। আমরা তখন ব্র্যাককে অ্যাপ্রোচ করেছিলাম। তাদের লোকগুলোকে মোটামুটি সেইফলি নিয়ে এসেছে।’
এ সময় মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ১৬০ আফগান শিক্ষার্থী বাংলাদেশে ফিরতে চান।
তিনি বলেন, ‘আফগানের ১৬০ জন ছাত্রছাত্রী আমাদের দেশে পড়ে, তারা শুনেছি যে আফগান লোকজন। তারা এখন আসতে চাচ্ছে, তাদের দেশে প্রবলেম বলে আসতে চাচ্ছে। আসতে চাইলে আমরা নেব, কিন্তু দে হ্যাভ টু মেক দেয়ার ওয়ে আউট। আমাদের তো ওখানে এমন কিছু নেই যে আমরা ওদের নিয়ে আসতে পারি। আমি শুনেছি, ওরা বাঙালি না। ওরা সবাই আফগান। সো আই ডোন্ট নো।’
ইউরোপ সফর নিয়েও কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোববার তার জেনেভার উদ্দেশে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফর করবেন তিনি।
এই সফরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রাপ্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হবে কি না জানতে চাওয়া হয় মন্ত্রীর কাছে।
তিনি বলেন, ‘না, টিকা নিয়ে যা প্রসেস-প্রসিডিওর আমরা ইতিমধ্যে নিয়েছি। সব দেশ টিকা প্রডিউস করে না। আমি যাচ্ছি জেনেভাতে, ওরা টিকা প্রডিউস করে না। সেখানে কোভ্যাক্সের আলোচনাটা হয়, সেটা আমরা কন্টিনিউয়াসলি করেই যাচ্ছি। তাই নতুন করে কোনো এজেন্ডা নয়, রেগুলার ইস্যু। জেনেভাতে যাচ্ছি, এলডিসির যে সামিট হবে সেখানে।’
এরপর মন্ত্রী যাবেন যুক্তরাজ্যে। তিনি বলেন, ‘২ তারিখে শেষ হবে জেনেভার কাজ। ৬ তারিখে শুরু হবে নেদারল্যান্ডসে। মাঝের ওই অল্প সময়ের জন্য দেশে না ফেরে লন্ডনে যাব।’
লন্ডন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আজ আমি তাজ্জব হলাম শুনে, আমাদের হাইকমিশনার সাহেব বললেন, ফরেন মিনিস্টার ড. কামাল হোসেন লাস্ট ইউকের ফরেন মিনিস্টার হাউসে দেখা করেছিলেন ১৯৭৪-এ। এরপর নাকি কেউ দেখা করেনি। আমার খুব তাজ্জব মনে হলো। এবার ওনার সঙ্গে দেখা হবে।’
লন্ডনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
বলেন, ‘তারা (ইউকে) ফর নো রিজন আমাদের রেড অ্যালার্ট দিয়ে রেখেছে। আমাদের চেয়ে বেশি লোক মারা গেছে ভারতে, তাদের কিন্তু রেড অ্যালার্ট দেয়নি। কেউ কেউ বলে এর কারণ হচ্ছে, যিনি সেক্রেটারি অব হাউস ইংল্যান্ডের, তিনি অরিজিন্যালি পাকিস্তানের, যা-ই হোক আই ডোন্ট বাই দ্যাট।
‘তা ছাড়া ক্লাইমেট ইস্যুটা আমাদের বড় ইস্যু। সুতরাং তাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমাদের রোহিঙ্গা ইস্যু বিগ ইস্যু, তাদের সঙ্গে সব সময় আলাপ হচ্ছে, আরও আলাপ করতে হবে।’
এরপর জলবায়ুসংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিতে নেদারল্যান্ডস যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘সেখানে গ্লোবাল অ্যাডাপটেশন নিয়ে রিজিওনাল সেন্টার আছে। আমি অ্যাডাপেটশন কমিটির একজন বোর্ড মেম্বার। বোর্ডের মিটিং হবে। সে কারণে ওখানে যাচ্ছি। সেখানে অনেক লোক থাকবেন। কোপ-২৬-এ আমরা কী অর্জন করতে চাই, সেটা নিয়ে অনেক আলোচনা হবে।’