বরের শখ ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যাবেন। নববধূকে উড়িয়ে নিয়ে আসবেন নিজ আঙিনায়। নতুন জামাইয়ের এই আবদার ফেলতে পারেননি কনের বাবা।
ফলাফল কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো বর এলেন হেলিকপ্টারে চড়ে। কনের বাবা উপজেলার পৌরসভার বাসিন্দা ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে হেলিকপ্টারে চড়া বর দেখতে পুরো গ্রাম যেন ভেঙে পড়ে।
এলাকার বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। সেখানে একজন রাজনৈতিক নেতার এ আয়োজন সাড়া ফেলে দেয় আশপাশের গ্রামগুলোতেও।
শুক্রবার ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। বর আসেন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। অনুষ্ঠান শেষে উড়িয়ে নিয়ে যান নতুন বউকে।
বর রাজধানীর সাভার হেমায়েতপুরের শিল্পপতি শাহাজাহান আলীর ছেলে রাসেল হাসান। কনের নাম তানজিনা পারভীন। দুজনই পড়াশোনা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে।
হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করা মানুষের মধ্যেই ছিলেন আব্দুল হাই। বললেন, ‘জীবনে মেলা বিয়ে দেখছি, হেলিকপ্টারত চড়ি বর আইসে এই প্রথম দেখলং। উলিপুরত মেলা বড় লোক আছে, কিন্তু কাইও হেলিকপ্টারত বিয়ে করে নাই। এ্যাদং বিয়ে প্রথম দেখলং হামরা।’
মমেনা বেগম নাম এক নারী বলেন, ‘বহু বিয়া দেখছি বাহে। কিন্তু ইংকা বিয়া জীবনে প্রথম দেখলাম। মাইনষের অনেক শখ আছে সেটা হেলিকাপ্টারত বিয়া দেখি বুঝলং। হেলিকাপ্টারে বর আচ্ছে শুনিয়া এলাকার শত শত মানুষ দেখতে আচ্ছে।’
উলিপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চার মেয়ের বাবা। স্থানীয়ভাবে প্রথম মেয়ের বিয়ে দেন। দ্বিতীয় মেয়ে তানজিনা পারভীন ব্রাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। কিন্তু মেয়ে জামাইয়ের আবদার হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করবেন তারা।
কনের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মেয়ে-জামাইয়ের আবদার পূরণ করতে এ আয়োজন। এই প্রথম এ এলাকায় হেলিকপ্টারে চড়ে আমার মেয়ের বিয়ে হল। তাদের আবদার পূরণ হয়েছে, এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে।’
উলিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ কবির হেলিকপ্টারে করে এসে বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সেখানে যেন নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয় সে জন্য আমাদের পুলিশ ফোর্স মোতায়েন ছিল। বর হেলিকপ্টারে করে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উলিপুরে ল্যান্ড করে। বিয়ে শেষে বিকেল ৫টার দিকে চলে যায়।’