করোনাভাইরাসের নতুন ঢেউয়ের কারণে ঋণ পরিশোধে আবারও ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আপাতত ঋণের কিস্তির ২৫ শতাংশ জমা দিয়েই নিয়মিত গ্রাহক থাকা যাবে। কেউ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন না।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ শিরোনামে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে সেটি জানাজানি হয় শুক্রবার।
গত জুনে জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, ঋণের কিস্তির ২০ শতাংশ ৩১ আগস্টের মধ্যে জমা দিয়েই নিয়মিত গ্রাহক থাকা যাবে।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণের পর ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এলে ব্যবসায়ীদের একটু স্বস্তি দিতে ঋণের কিস্তি পরিশোধে সময় দেয়। গোটা বছর কিস্তি জমা না দিয়েও খেলাপিমুক্ত থাকা গেছে। আর এ কারণে ওই বছর খেলাপি ঋণ কমে এসেছিল।
গত জানুয়ারি থেকে এই সুবিধা প্রত্যাহারের পর থেকে খেলাপি ঋণ বেড়ে চলেছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়ে এখন এক লাখ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই হয়ে গেছে।
তবে ঋণ পরিশোধে এখনও সুবিধা অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে চলমান, তলবি ও মেয়াদি প্রকৃতির ঋণ-বিনিয়োগে পরিশোধে বা সমন্বয়ের ক্ষেত্রে চলতি বছরের মার্চ মাসের কিস্তি ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধে বা সমন্বয় করলে ওই ঋণ বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না বলে নির্দশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাবে চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা বজায় রাখা এবং বেসরকারি খাতে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রবাহের গতিধারা স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বাণিজ্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে জানুয়ারি হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তিগুলোর ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে উক্ত সময়ে ঋণ বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না।’
এক্ষেত্রে, ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির অবশিষ্টাংশ বিদ্যমান মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে পরিশাধ করতে হবে।
অন্যান্য কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করতে হবে।
সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ বা বিনিয়োগের উপর আরোপিত সুদ আয়খাতে স্থানান্তরকরণ এবং উক্ত ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বিষয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে।
প্রজ্ঞাপনের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানানো হয়।