ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বালুবাহী ট্রলারের ধাক্কায় যাত্রীবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১।
নিউজবাংলাকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ১৬ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মুমূর্ষু পাঁচজন।
সেখানে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নিয়েছেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
নিহতদের মধ্যে ১২ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন কমলা বেগম, ফরিদা বেগম, মুন্নি, মঞ্জুর বেগম, শারমিন, জহিরুল ইসলাম, নাজরিন আক্তার, মোমেনা, সিফাত, তাসফিয়া মিম ও মিনার।
উপজেলার লইস্কা বিলে শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরই সেখানে ছুটে যান পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
দুর্ঘটনার পর সাঁতরে তীরে ওঠেন সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের আঁখি আক্তার। তিনি বলেন, ‘বিজয়নগরের চম্পকনগর ঘাট থেকে আনন্দ বাজার ঘাটে পৌঁছাতে নৌকায় উঠি। সঙ্গে ছিল স্বামী মুরাদ মিয়া, দুই ছেলে, শাশুড়ি ও ভাশুরের তিন ছেলে।
‘সব মিলে নৌকায় শতাধিক যাত্রী ছিল। নৌকাটি লইস্কা বিলে বালুবোঝাই একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে তলিয়ে যায়। স্বামী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে সাঁতরে তীরে আসি। কিন্তু আরেক ছেলে, শাশুড়ি ও ভাশুরের তিন ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছি না।’
হাসপাতালে ভর্তি মুরাদ মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। তারপর অনেক কষ্টে এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সাঁতরে ওপরে উঠেছি। আমার এক ছেলে, মা ও তিন ভাতিজা এখনও নিখোঁজ রয়েছে।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান রাত ১০টার দিকে জানান, এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। এখনও নৌকাটি উদ্ধার করা যায়নি। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তদন্ত কমিটি
নৌকাডুবির ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিনকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের প্রত্যকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক জানান, মুমূর্ষু অবস্থায় পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।