টিকা প্রাপ্তির দুই সপ্তাহ পরে অর্থাৎ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আমরা আলাপ-আলোচনা করছি, আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি, আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলছি। গতকালই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আমাদের সকল বিশেষজ্ঞ, আমাদের কোভিড-১৯-এর জাতীয় পরামর্শক কমিটি, টেকনিক্যাল কমিটি এবং আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশন ও শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনকে নিয়ে একটি যৌথ মিটিং করা হয়েছে।
‘আমরা সেখানে কী করে আগামী এক মাসের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব যাদের বয়স ১৮-এর বেশি, যারা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে রয়েছে তাদের টিকা নিশ্চিত করতে পারি। টিকা প্রাপ্তির দুই সপ্তাহ পরে অর্থাৎ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে পারব।’
স্কুলগুলো খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানসম্মতভাবে বলা হয় যে, সংক্রমণের হার শতকরা ৫ ভাগ বা তার নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়। কিন্তু আমাদের এখানে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং আমাদের শিক্ষার্থীরাও স্বল্প পরিসরে অনেকের সঙ্গেই বসবাস করছে। তারপর দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় পরামর্শক কমিটির সাথে আবারও আমরা সামনের সপ্তাহে বসব এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সংক্রমণের হার ঠিক কত শতাংশে নামলে বড় ঝুঁকি না নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব, আমরা সেই পর্যায়ে আসার জন্য অপেক্ষা করব।
মোবাইলে গেমসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিতে ভালোর সঙ্গে মন্দও কিছু থাকে। শুধু এই সময়ের জন্য নয়, মোবাইল এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা যেমন দেখবেন তেমনি বাবা মায়ের তদারকিটাও খুব জরুরি। কেননা একটা বড় সময় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে কাটান। মোবাইলের মাধ্যমে পড়াশোনা বা অন্য ডিভাইসের মাধ্যমে পড়াশোনা, এটাও এখন বাস্তবতা। এটাকেও এখন মেনে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ফিরিয়ে নিলেও অনলাইন পদ্ধতি কিন্তু থাকবে। কাজেই এটা এমন হয় যে শ্রেণি কক্ষে চলে গেলে আমাদের আর কোনো ডিভাইসের ব্যবহার থাকবে না, তা কিন্তু নয়। এখন এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময় আসছে, সেখানে ডিজিটাল লার্নিং এখন আমাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েই যাবে।
‘কাজেই সেখানে কি করে শিক্ষার্থীদেরকে এই ডিজিটাল ডিভাইসের যে নেতিবাচক দিক আছে তা থেকে কিভাবে তাদের মুক্ত রাখবো, সেক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি অভিভাবকদের ও একটা বিরাট দায়িত্ব আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকুক বা না থাকুক সে দায়িত্ব তো অভিভাবকদের পালন করতে হবে।’
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।