বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যুবকের মরদেহ, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

  •    
  • ২৭ আগস্ট, ২০২১ ১৭:১৯

স্বেচ্ছাসেবক মো. সরোয়ার বলেন, ‘গত (বৃহস্পতিবার) রাত সোয়া ৩টার দিকে আমাদের ডেকে তোলা হয় একজন বাথরুমে আত্মহত্যা করেছে বলে। ওখানে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা গিয়ে দেখতে পান চন্দন বাথরুমের ভেন্টিলেটরের সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে তাকে সেখান থেকে নামিয়ে মেঝেতে এনে রাখা হয়।’

বরিশাল নগরীতে একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নগরীর নবগ্রাম রোডের হলি কেয়ার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের চতুর্থ তলার মেঝে থেকে শুক্রবার সকালে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দাবি, চন্দন আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার স্বজনদের অভিযোগ, নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ওই যুবককে।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজালাল বলেন, মৃত যুবকের নাম চন্দন সরকার। তার বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলার বড়পাইকা এলাকায়।

হলি কেয়ারের চতুর্থ তলার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক মো. সরোয়ার বলেন, ‘গত (বৃহস্পতিবার) রাত সোয়া ৩টার দিকে আমাদের ডেকে তোলা হয় একজন বাথরুমে আত্মহত্যা করেছে বলে। ওখানে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা গিয়ে দেখতে পান চন্দন বাথরুমের ভেন্টিলেটরের সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে তাকে সেখান থেকে নামিয়ে মেঝেতে এনে রাখা হয়।’

এসআই শাহজালাল জানান, সকালে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে ফোন করে জানানো হয়, চন্দন নামের একজন আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ মেঝেতে রাখা হয়েছে।

হলি কেয়ারের ব্যবস্থাপক মাইনুল হক তমাল বলেন, ‘এই মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ২৮ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তাদের মধ্যে চন্দন নামের একজন মারা গেছেন। পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। বিস্তারিত তারাই বলতে পারবে।’

চন্দনের মামা নিবাস মহুরী বলেন, ‘আমার ভাগনেকে এর আগেও এই নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। গত মে মাসে সে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে। পরে আবার মাসকাসক্ত হলে গত ৭ আগস্ট তাকে এই হলি কেয়ারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

‘সে তখন আসতে চায়নি। সে বলেছিল, এখানে মারধর করা হয়। আমরা তার কথা শুনিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোররাতে হলি কেয়ার থেকে কল করে আমাকে জানানো হয় চন্দন আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করি না। আমার ভাগনেকে টর্চার (নির্যাতন) করে মেরে ফেলা হয়েছে।

‘তাকে আবার হলি কেয়ারে দিয়ে গেলে তারা (কর্তৃপক্ষ) কোমরের বেল্টটি পর্যন্ত রাখতে দেয়নি। দড়ি, রশি বা গামছা কোথা থেকে আসবে তার কাছে?’

এটি হত্যাকাণ্ড দাবি করে চন্দনের মামা অভিযোগ করে বলেন, ‘আত্মহত্যা করলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকেই মরদেহ উদ্ধার করবে। তা না হয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন শৌচাগার থেকে চন্দনের মরদেহ মেঝেতে এনে রেখেছে।’

ওই নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি রোগীদের কয়েকজন জানান, স্বেচ্ছাসেবক সরোয়ার কথায় কথায় রোগীদের মারধর করেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চন্দনকে মারধর করা হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে সবাই ঘুমাতে যায়।

সরোয়ার এ বিষয়ে বলেন, ‘গতকাল রাতে চন্দন পশ্চিম দিকে পা দিয়ে শুয়ে পড়লে আরেক রোগী তারিকুল তাকে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চন্দন তারিকুলকে ঘুষি মারেন। এ সময়ে চন্দনকে আটকাতে গিয়ে কয়েকটি থাপ্পড় দিয়েছি। কিন্তু তাকে কোনো নির্যাতন করিনি।’

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই শাহজালাল জানান, সুরতহালে ওই যুবকের গলায় দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, চন্দনের স্বজনরা লিখিত অভিযোগ দিলে বা মামলা করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর