পদ্মা নদীতে নাব্যতাসংকটের কারণে শিমুলিয়া-জাজিরা রুটেও ফেরি চলাচল অনিশ্চয়তায় পড়েছে। খনন শেষে কবে এই চ্যানেলে ফেরি চালু হবে, তা এ মুহূর্তে কেউ বলতে পারছেন না।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান কমোডর তাজুল ইসলাম, শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে।
পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ১৮ আগস্ট থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শরীয়তপুরের জাজিরার সাত্তার মাদবর-মঙ্গলমাঝি ঘাট দিয়ে ফেরি পারাপারের সিদ্ধান্ত নেয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চলাচলের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
দুপুরে বৈঠক শেষে শরীয়তপুরের ডিসি পারভেজ হাসান জানান, জরিপে দেখা গেছে, পদ্মার এই চ্যানেলে নাব্যতাসংকটের কারণে ফেরি চলাচল শুরু করা যাচ্ছে না। খনন শেষে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এলে ফেরি চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ৫ সেপ্টেম্বর নৌপরিহবন মন্ত্রণালয়ের সভা শেষে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে।
বিআইডব্লিউটিএর নৌপরিবহন সংরক্ষণ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর ওবায়েদুল করিম খান হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চলাচলের কথা ছিল। সে লক্ষ্যে সকালে নৌপথের জরিপ করা হয়। জরিপে পদ্মা সেতুর ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলার বরাবর নাব্যতাসংকট দেখা গেছে। সেখানে গভীরতা পাওয়া গেছে ৬ ফুট। ফেরি চলাচলের জন্য ন্যূনতম ১০ থেকে ১২ ফুট গভীরতার প্রয়োজন। এ অংশে খনন করতে হবে।
তিনি আরও জানান, পদ্মা সেতুর পিলার থেকে ২০০ মিটার ভাটিতে রেখে ফেরি চলাচল করার নিদের্শনা রয়েছে। কিন্তু সেতুর ৩৬ নম্বর পিলার থেকে ৩৮ নম্বর পর্যন্ত সেই দূরত্ব নেই। সে জন্য এ অংশে খননের পর ফেরি চলাচলের উপযোগী হবে।
জাজিরা ঘাট এলাকার বাসিন্দা এস্কারদার মোল্লা বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে জাজিরার ফেরিঘাট নির্মাণ শেষ হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে নতুন একটি পন্টুন। বৃহস্পতিবার ফেরি চলাচল পরীক্ষা করার কথা ছিল। শুক্রবার থেকে পুরোদমে ফেরি চলবে শুনেছি। এখন শুনি ফেরি চলাচল ঝুলে গেছে।’
ওহাব মাঝি বলেন, ‘ফেরিঘাট হয়েছে দেখে আনন্দিত হয়েছিলাম। আজ ফেরি চালু হবে বলে সারা দিন অপেক্ষা করেছি। বিকেলে শুনলাম ফেরি কবে থেকে চলবে তাও কেউ বলতে পারছে না। এ নিয়ে আমরা হতাশ।’
১৮ আগস্ট তীব্র স্রোতের কারণে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-মাদারীপুরের বাংলাবাজার রুটে ফেরি বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে জাজিরার সাত্তার মাদবর-মঙ্গলমাঝি ঘাট দিয়ে ফেরি পারাপারের সিদ্ধান্ত নেয় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী ২১ আগস্ট থেকে সাত্তার মাদবর-মঙ্গলমাঝি ফেরিঘাট নির্মাণ শুরু হয়। বুধবার সন্ধ্যায় ঘাটটি নির্মাণ শেষ হয়েছে।