সিলেট থেকে একসঙ্গে নিখোঁজ হওয়া মাদ্রাসাছাত্র তিন কিশোরের সন্ধান মিলেছে। বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জে চলে গিয়েছিলে তারা। সেখানে একটি রেস্টুরেন্টে পরিবেশনকারীর (ওয়েটার) কাজও করে।পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তিন কিশোরই এখন নিজ নিজ বাসায় রয়েছে।মাদ্রাসায় পড়ার ভয়ে তারা কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।গত ৩ আগস্ট নিখোঁজ হয় সাজ্জাদ মিয়া, রোহান আহমেদ, নাহিম আহমেদ। তারা সবাই সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জালালপুরের আল্লামা আব্দুল মুকিত মঞ্জলালী একাডেমির হিফজ শাখার ছাত্র।
দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়ি। মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে তারা বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। তবে ৭ আগস্ট মাদ্রাসায় ফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, তারা মাদ্রাসায় যায়নি।গত ৮ আগস্ট সাজ্জাদ মিয়ার বোন দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় ১৫ আগস্ট।ওই দিনই সিলেট থেকে আব্দুর রাজ্জাক নামের এক কলেজছাত্র তালেবানদের হয়ে লড়তে আফগানিস্তানে যাওয়ার খবর পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তালেবানদের হয়ে লড়তে আরও অনেকেই আফগানিস্তানে চলে গেছে বলে জানায় পুলিশ।এমন খবরের মধ্যে তিন মাদ্রাসাছাত্রের একসঙ্গে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। গত ১৬ আগস্ট নিউজবাংলায় ‘সিলেটে মাদ্রাসার ৩ ছাত্র নিখোঁজ, খুঁজছে পুলিশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।সে সময় দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে তিন ছাত্র নিখোঁজের ব্যাপারটা আসলেই উদ্বেগজনক। কারণ সম্প্রতি তালেবান ইস্যুতে বাংলাদেশের কিশোর-যুবকদের সম্পৃক্ততার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এই ব্যাপারটা সিরিয়াসলি দেখছি।’তবে তিন কিশোরকে উদ্ধারের পর পুলিশ জানতে পারে, তালেবান ইস্যু নয় বরং মাদ্রাসায় পড়ার ভয়েই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় তারা।বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, কয়েক দিন আগে এই তিন কিশোর নিজে থেকেই তাদের বাড়িতে ফোন দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানায় এবং মাদ্রাসায় পড়ার ভয়ে তারা পালিয়ে যায় বলে পরিবারের সদস্যদের কাছে বলে।পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, বাড়ি থেকে পালিয়ে তারা পূর্ব কেরানীগঞ্জের একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের চাকরি নেয়।গত ২২ আগস্ট কেরানীগঞ্জের থানা পুলিশের সহায়তায় আমরা ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন কিশোরকে উদ্ধার করি। এরপর তাদের নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।ছেলেকে ফিরে পাওয়ার তথ্য জানিয়ে রোহান আহমেদের বাবা নূরুল হক বলেন, সে এখন বাড়িতেই আছে। ভালো আছে।