মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার একটি খাসিয়া পুঞ্জিতে পূর্ব বিরোধের জেরে পানজুমের প্রায় তিন হাজার গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ বলছে, গাছ কাটার অভিযোগ এনে ৮ জনের বিরুদ্ধে বুধবার থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে সামাজিক বনায়ন নিয়ে উপকারভোগী রফিক মিয়া, বশির মিয়া, ইসরাইল আলী ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে ডুলুছড়া পুঞ্জির বাসিন্দাদের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে বুধবার রাত ২টার দিকে পাশের পুঞ্জির প্রায় ২৫ একর জমির পানজুমের ২ হাজার ৮ শ’ গাছ কেটে ফেলা হয়।
বেলুয়া পুঞ্জির পান জুমের মালিক ও ডেম্যান হেনরি তালাং, পারমিত চিরামসহ ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ পান চাষি জানান, অভিযুক্তরা পান জুমের ভূমি সামাজিক বনায়নের দাবি করে জোর করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য পুঞ্জির লোকদের হুমকি দিয়ে আসছিল তারা।
প্রায় ২ সপ্তাহ আগের ডুলুছড়া পুঞ্জির বাসিন্দাদের হয়রানি ও উচ্ছেদ করতে পাঁয়তারা শুরু করে। বনায়নের চারা বিনষ্টের অভিযোগ এনে মামলা করা হয়।
ডেম্যান হেনরি তালাং বলেন, ‘আমরা পুঞ্জিবাসী এর প্রতিবাদ করেছিলাম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বশির মিয়ারা বনায়নের নামে জুম দখলের জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাতের আধারে আমাদের পানজুমে হামলা চালায়। পরদিন বুধবার রাতে আমরা থানায় অভিযোগ করেছি। বনায়নের নামে আমাদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা করা হচ্ছে।’
অভিযোগের বিষয়ে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী বশির মিয়া ও ইসরাইল মিয়ার বৃহস্পতিবার বিকেল বলেন, সেখানে গিয়ে পানগাছ কাটার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন, ‘বনবিভাগ সামাজিক বনায়ন করুক আমরাও চাই। কিন্তু বনায়নের নামে পানজুম ধ্বংস করে আদিবাসীদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি মহল। নিরীহ আদিবাসীদের মামলা দিয়ে হয়রানি ও হামলা বন্ধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হোক।’
পরিবেশ আন্দোলন বাপার সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবুল করিম কিম জানান, ‘কিছু দিন পর পর এভাবে পান গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো সুরাহা হচ্ছে না। রাষ্ট্র যদি মনে করে এরা তার নাগরিক তাহলে নীরব থাকা ঠিক হবে না।’
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনা মামলা হতে পারে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।