বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিবিড় তদারকির মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর তাগিদ

  •    
  • ২৬ আগস্ট, ২০২১ ১৯:৫৬

রাজস্ব বোর্ডের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উদ্দেশে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে না গিয়ে যতটা সম্ভব নমনীয় আচরণ করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে রাজস্ব আহরণে বেশি গুরুত্ব দিতে বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তদারকি ব্যবস্থা আরও জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়।

জোর করে নয়, নিবিড় তদারকি ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রাজস্ব সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত নিস্পত্তি করে আদায় কার্যক্রম জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে এক পর্যালোচনা সভায় এ তাগিদ দেয়া হয়। করোনার মধ্যে চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায় কীভাবে বাড়নো যায়, তার কর্মকৌশল নির্ধারণে গত সপ্তাহে এ বৈঠক হয়।

ভার্চুয়াল এ বৈঠকে রাজস্ব বোর্ডের সকল সিনিয়র সদস্য ও মাঠ পর্যায়ের সব কাস্টমস ও কর কমিশনার ও অর্থমন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী এনবিআরের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, করোনার মধ্যে ব্যবসা–বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে।

রাজস্ব বোর্ডের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উদ্দেশে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে না গিয়ে যতটা সম্ভব নমনীয় আচরণ করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে রাজস্ব আহরণে বেশি গুরুত্ব দিতে বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তদারকি ব্যবস্থা আরও জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

বৈঠকে প্রধানত তিনটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত, আদায় কার্যক্রম জোরদার করার অংশ হিসেবে রাজস্ব বোর্ডের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো পরিদর্শন করবেন।

দ্বিতীয়ত, অনিষ্পন্ন যেসব রাজস্ব মামলা বছরের পর বছর ঝুলে আছে, সে গুলো দ্রুত নিস্পত্তি করা। তৃতীয়ত, বছরের শুরুতেই প্রত্যেক কমিশনারেট অফিস কর্তৃপক্ষকে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা।

এনবিআর চেয়ারম্যান বৈঠকে অংশ নেয়া কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, করোনার মধ্যে বেশি ব্যয়ের লক্ষ্য নিয়ে এবারের বাজেটটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই বাজেটে অর্থায়নের সিংহভাগ জোগান দিতে হবে এনবিআরকে। ফলে এবার যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে যে ভাবেই হউক তা অর্জন করতেই হবে।

এ জন্য অর্থবছরের প্রথম থেকেই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। যে সব কর্মকর্তা লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না, তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

করোনা প্রতিরোধে টিকা ক্রয়, সামাজিক সুরক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে বেশি ব্যয়ের লক্ষ্য নিয়ে এবার ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বিশাল বাজেট ঘোষণা করে সরকার।

এই বাজেটে অর্থায়নে এনবিআরের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করা হয়। এখন আদায় কার্যক্রম কীভাবে গতিশীল করা যায়, সে লক্ষ্যে এ বৈঠক ডাকা হয়।

বৈঠকে, কর ফাঁকি ও মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বৈঠকে বলা হয়, করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি ব্যয় মেটাতে এখন ভরসা একমাত্র রাজস্বখাত। এ জন্য সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে এ খাতের ওপর।

অর্থমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। বিশেষ করে উন্নয়ন প্রকল্পে ৫০ শতাংশের বেশি গাড়ি ক্রয় না করা, সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ।

এসব খাতে ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণের পর, এখন রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কর-সংস্কৃতি খুবই দুর্বল। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে অদক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও আইন-কানুন অসঙ্গতিপূর্ণ।’

বর্তমানে এনবিআরের যে সক্ষমতা, তা দিয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। এই সংস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেন তিনি।

বৈঠকে, বিদায়ী অর্থবছরের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। গেল অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। যেখানে এর আগের অর্থবছরে ছিল ঋণাত্নক।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব আহরণের চলমান ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এ জন্য নিবিড় তদারকি ও রাজস্ব মামলা দ্রুত নিস্পত্তিতে বেশি গুরুত্ব দেন তিনি।

এদিকে, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি পর্যালোচনায় মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে শিগগিরই আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে, এনবিআর চেয়ারম্যান নতুন করে দিকনির্দেশনা দেবেন বলে জানা গেছে।

এ বিভাগের আরো খবর