করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে এলেও বেড়েছে ডেঙ্গু।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এ সময়ে মারা গেছে ৪০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সংখ্য ৯ হাজার ১২০ জন।
গত জানুয়ারিতে ৩২ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বছর শুরু হয়েছিল। জুনে এটা ১৭২ জনে ওঠে। জুলাই মাসে সেটিই হয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৮৬ জনে। তাতে সব মিলিয়ে এ বছরের প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গুতে মোট শনাক্ত দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৮ জন। জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। আগস্টে এসে চিত্রটি উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে জানানো হয়, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে শুধু ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হয়েছে ২১৭ জন। অন্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে ৫০ জন।
চলতি বছর এ নিয়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হলো ৯ হাজার ১২০ জনের শরীরে। এসব রোগীর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৭ হাজার ৯৮৮ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ৯০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯৬৫ ডেঙ্গু রোগী।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত সাত মাসে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ২৬ দিনে ২৮ জনের মৃত্যু হয়।
২০১৯ সালে ডেঙ্গু রোগে ১৭৯ জনের মৃত্যু ও লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর গত বছর সতর্ক অবস্থানে ছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তারপরও ২০২০ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ১ হাজার ৪০৫ জন, যাদের মধ্যে ৬ জন মারা যায়। গত বছর সংক্রমণের মাত্রা কম থাকলেও এ বছর পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড মহামারির মধ্যে করোনা ও ডেঙ্গু নিয়ে যেসব রোগী হাসপাতালে আসছে, তাদের অনেকেরই জটিলতা বেশি। আগামী দিনে এ ধরনের রোগী বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ডেঙ্গু নিধনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত মার্চ মাসে সিটি করপোরেশনগুলোতে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতে মশার উৎপত্তিস্থলগুলো ধ্বংস করে দিতে বলা হয়েছিল। তবে তাতে কোনো কাজ হয়নি। ডেঙ্গু যেন না হয়, তার ব্যবস্থা নিতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘ডেঙ্গু হলে নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ সেবা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। তবে ডেঙ্গু যেন না হয়, সে জন্য সিটি করপোরেশনকে কাজ করতে হবে।’