এক লাখ গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ অনলাইন শপিং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এবার ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়েছে।
১৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার এই মামলা করেছে বলে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানিয়েছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ভ্যাট আইনে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’
মইনুল খান জানান, রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত ই-অরেঞ্জ অনলাইন শপিং প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ১৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি হাউজ-৫/এ, লেভেল- ৩ ও ৪, রোড- ১৩৬/১৩৭, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২ এ অবস্থিত। এর মূসক নিবন্ধন নং-০০৩৬২৮০২৭-০১০১।
অভিযানে দেখা যায়, ই-অরেঞ্জ অনলাইন প্লাটফর্মে বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় করে; কিন্তু তাদের প্রাপ্ত কমিশনের ওপর আরোপণীয় ভ্যাট যথাযথভাবে জমা দেয় না।
প্রতিষ্ঠানটি বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাকি দিয়ে আসছে মর্মে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে গত ৮ জুন ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের উপপরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী সোনিয়া মেহজাবিনের সহযোগিতা করেন এবং তিনি প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট সংশ্লিষ্ট দলিলাদি উপস্থাপন করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করে হিসাব বিবরণী জব্দ করা হয়।
তাতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে মোট ২৪৫ কোটি ৭৫ লাখ ৫৩ হাজার ২১৫ টাকার সেবা/পণ্য ক্রয় করে এবং ২৪৯ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭১০ টাকার সেবা/পণ্য বিক্রয় করে। উক্ত সেবা/পণ্য বিক্রয়ের ওপর ই-অরেঞ্জ ৩ কোটি ৮৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯৫ টাকা কমিশন লাভ করে। প্রাপ্ত কমিশনের ওপর ৫% হারে নির্ণীত ভ্যাটের পরিমাণ ১৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯২৪ টাকা ৭৫ পয়সা প্রযোজ্য হলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ৬ লাখ ২৩ হাজার ৭৬৭ টাকা পরিশোধ করেছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনলাইন শপিং প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। এতে সরকারের ১৩ লাখ ১৬ হাজার ১৫৮ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে।
বিক্রয় তথ্য গোপন এবং ভ্যাট ফাঁকির সঙ্গে জড়িত থাকায় ই-অরেঞ্জ ভ্যাট আইন লংঘন করেছে। অভিযানের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানান মইনুল খান।