নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে চার শ্রমিক। তারা ঘটনার দিন আগুনের সূত্রপাতের প্রত্যক্ষদর্শী।
জেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কাউসার আলমের আদালতে বুধবার বিকেলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, হাশেম ফুডসের কারখানায় আগুনের ঘটনায় পুলিশের করা মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার সময়ের চারজন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করেন। পরে তারা আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আতাউর রহমান জানান, ৫টা ১০ মিনিটের দিকে কারখানার নীচ তলার পূর্বদিক থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর প্রথম দেখে ১৭ বছর বয়সী শ্রমিক শাকিব হোসেন গিয়াস। তখন সে চিৎকার করে ডাকে আরেক শ্রমিক নূর আলমকে। তারা আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। মো. হীরা ও মো. আবদুল্লাহ নামে আরও দুই শ্রমিক ওই দিনের বিভিন্ন বিষয়ে আদালতকে জানিয়েছেন।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আগুন জ্বলে ওঠার পর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মজুত করা কার্টন, কাগজের রোলের মধ্যে। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন উপরে তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।’
এদিন নিহত ৪৫ শ্রমিকের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার তথ্য অতিরিক্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বদিউজ্জামানের আদালতে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান সিআইডির পরিদর্শক আতাউর রহমান।
তিনি জানান, বাকি মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত করার পর তাদের তথ্য আদালতে পাঠানো হবে।
গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।
তিন ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় তখনই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
বাকি লাশগুলো শনাক্ত করার উপায় ছিল না। পরে লাশগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়। এরপর স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ মনে করা হচ্ছে কারখানার প্রতি ফ্লোরে মজুত করা দাহ্য পদার্থ। ছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, যা আগুন আরও ছড়িয়ে যেতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।