গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
খানাখন্দে ভরা রাস্তা সংস্কারসহ আলাদা লেন ও পয়নিষ্কাশন ড্রেন নির্মাণের কাজ একসঙ্গে চলায় এ জটের সৃষ্টি বলে জানা গেছে।
মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী ও টঙ্গী-ঘোড়াশাল সড়কের স্টেশন রোড থেকে মীরের বাজার পর্যন্ত সড়কে বুধবার সকাল থেকেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট বাড়তে থাকে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বুধবার দুপুর ২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় গাজীপুরমুখী রাস্তায় অসংখ্য খানাখন্দ। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গর্তগুলো বড় আকার নিয়েছে। এর মধ্যেই টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।
এছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে ফ্লাইওভার, ওভারপাস, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), সাধারণ যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন ও পয়নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের নির্মাণের কাজ একসঙ্গে চলছে। বিভিন্ন সময়ে শুরু হওয়া এ কাজগুলোর একটিও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
নির্মাণ কাজের জন্য মহাসড়কের গাজীপুর অংশে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সড়কটি। এ ছাড়া বিকল্প সড়ক না থাকায় এক লেনেই চলাচল করছে গণপরিবহন, ট্রাক, অন্যান্য যানসহ পথচারীরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মহাসড়কের যাত্রীসহ রাজধানীর বাসিন্দারাও।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, যানজট নিরসনে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। তবে তাদের কোনো পদক্ষেপই কাজে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে সকাল ৯টায় চান্দনা চৌরাস্তা থেকে বনানীর উদ্দেশে বাসে উঠেন তামান্না ফেরদৌস। তীব্র যানজটের কারণে বেলা ১টার দিকে আব্দুল্লাহপুর পৌঁছান তিনি। ততক্ষণে ইন্টারভিউয়ের সময় শেষ। তাই বাধ্য হয়ে ফিরতি পথের বাসে উঠে পড়েন।
গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে সকাল ৮টায় রাজধানীর সায়দাবাদের উদ্দেশে বাসে উঠেন আসলাম উদ্দিন। চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত মহাসড়ক স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী আসতে তার সময় লেগেছে তিন ঘণ্টার বেশি।
ট্রাক চালক ফজলু জানান, তেজগাঁও থেকে মালামাল নিয়ে গাজীপুরের মাওনার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। টঙ্গী আসতেই সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা। টঙ্গী ব্রিজ থেকে চেরাগআলী পৌঁছাতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টা।
মহাসড়কে তীব্র যানজটের বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বলেন, ‘মহাসড়কের গাজীপুরমুখী লেনের অসংখ্য গর্ত বৃষ্টিতে বড় হয়ে যাওয়ায় মূল সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও মিলগেট এলাকা থেকে চেরাগআলী পর্যন্ত মহাসড়কে কোনো রোড ডিভাইডার না থাকায় সড়কের বেশ কিছু অংশে এক লেনে চলছে যানগুলো।
তিনি আরও বলেন, সড়কের যানজট অংশের ছবি ও ভিডিও বিআরটি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দ্রুত সংস্কারের অনুরোধ করা হয়েছে। মিলগেট এলাকার গর্তগুলো সংস্কার কাজও শুরু করা হয়েছে। দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে আশা করেন তিনি।