ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌর এলাকার ১৫ বছরের এক কিশোরীর মোবাইল নম্বরে শুক্রবার মধ্যরাতে ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়ে এসেছিল কল। ফোনে কথোপকথনে তাকে দেখানো হয় গুপ্তধনের লোভ। কথা না শুনলে মা ও বোনের বড় ধরনের ক্ষতির ভয়ও দেখানো হয়।
একপর্যায়ে চক্রটির কথামতো সোমবার দুপুরে বাড়ি থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার উদ্দেশে রওনা দেয় কিশোরী। তবে জিনের বাদশা চক্রের খপ্পরে পড়ার আগেই জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বাসে গোবিন্দগঞ্জ যাওয়ার পথে কিশোরীর কথাবার্তায় সন্দেহ হলে পাশের আসনে থাকা বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের এক শিক্ষক কলটি করেন। উদ্ধারের পর মঙ্গলবার দুপুরে ওই কিশোরীকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাত ৩টার দিকে ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়ে ওই কিশোরীর মোবাইল ফোনে কল করা হয়। দীর্ঘক্ষণ কথা বলে তাকে গুপ্তধনের প্রলোভন এবং নানা ভয়-ভীতি দেখানো হয়।
শুক্রবার থেকে নিয়মিত কথাবার্তার একপর্যায়ে মেয়েটিকে একা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় যেতে বলা হয়। না গেলে মা-বোনের বড় ধরনের ক্ষতি হবে বলে সাবধান করা হয়।
গুপ্তধনের লোভ আর মা-বোনকে বাঁচাতে ওই কিশোরী সোমবার বেলা ৩টার দিকে একটি বাসে গোবিন্দগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয়। মেয়েকে দীর্ঘক্ষণ না পেয়ে এর মধ্যে পরিবারের লোকজনও থানায় খবর দেন।
তিনি আরও জানান, বাসে কিশোরীর পাশের আসনে বসেছিলেন বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক রমজান আলী। একটু পর পর মেয়েটির মোবাইলে কল আসা এবং তার কথাবার্তায় সন্দেহ হয় রমজানের। পরে তিনি ৯৯৯-এ কল দেন। পরে রাত ৮টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর থানার সামনে বাস থামিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বগুড়ার শাজাহানপুর থানা থেকে ফুলপুর থানায় এনে দুপুরে ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। তবে প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।