১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘মূল পয়েন্টে’ আসেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আগস্ট আসলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অস্থিরতায় ভোগেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-কমিটির ‘শ্রদ্ধায় স্মরণে ৭৫’ শীর্ষক অনুষ্ঠান তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠান হয়।
বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৯৫ সাল থেকে টানা একজন (খালেদা জিয়া) ভুয়া জন্মদিবস পালন করেন। আমি ফখরুল সাহেবকে বারবার করি এই প্রশ্ন। বেগম জিয়ার প্রকৃত জন্মদিবস কোনটি। এ জবাবটি আপনার কাছে এক কথায় চাই। উনি আবোল-তাবোল বলেন, আশে পাশে ঘুরেন, কিন্তু মূল পয়েন্টে আসেন না।’
‘বেগম জিয়ার জন্মদিন নিয়ে বলে নাকি আমি শিষ্টাচার বর্হিভুত কাজ করেছি। কিন্তু এখানে কীভাবে শিষ্টাচারের ভঙ্গ হলো?’- মির্জা ফখরুলকে এই প্রশ্নেও রাখেন তিনি।
সম্প্রতি এক বক্তব্যে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনের পক্ষে দালিলিক প্রকাশ প্রকাশের চ্যালেঞ্জ দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত মোট ৬টি জন্মদিনের কথা প্রকাশ পেয়েছে, যেগুলোর নথি আছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো তথ্যেও অন্য একটি দিন জন্মদিন হিসেবে উল্লেখ আছে।
সোমবার এই বক্তব্যর জনাব না দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গোটা দেশের মানুষ যখন করোনার টিকা ও জীবন-মৃত্য নিয়ে লড়ছে সেই সময়ে তারা এটাকে ডাইভার্ট করে দিতে চান বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চায়।
‘আমি মনে করি উনার (ওবায়দুল কাদের) বক্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত। কোনো দায়িত্বশীল নেতার কাছ থেকে এই বিষয় নিয়ে এত কথা বলার আছে বলে আমি মনে করি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি হাওয়া থেকে পাওয়া কথা বলিনি। আমি বলেছি, বেগম জিয়ার জীবনী থেকে পাওয়া তথ্য।’
‘শ্রদ্ধায় স্মরণে ৭৫’ শীর্ষক আয়োজনে সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা
তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, এই ভুয়া জন্মদিবস পালন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিহিংসার রাজনীতির নিকৃষ্টতম নজির, যা আপনারা স্থাপন করেছেন।
‘আগে বেগম জিয়ার জন্মদিন ৫টা ছিল। করোনা টেস্টে উনার জন্মদিবস ৮ মে ১৯৪৬। সেটাও এবার ভুলে গেছে, ঠিকই জন্মদিবস ১৫ আগস্ট কেক কাটেনি, কিন্তু ফুল দিয়ে আসছে। জন্মদিবস পালন করেছে, মিলাদ মাহফিল দোয়া পড়েছে।’
জজ মিয়া নাটকের জবাব দিতে না পেরে অস্থিরতা
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব, জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিলেন। জানি আগস্ট আসলেই একটু অস্থিরতায় ভোগেন। কারণ, জজ মিয়া নাটকের কোন জবাব দিতে পারছেন না।
‘এক সময় তাদের আমলের বিচার বিভাগীয় কমিশন বলল যে, প্রতিবেশী একটি দেশ এই ঘটনার সঙ্গে (২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা) জড়িত। তার মানে ভারত। এফবিআইকে তদন্ত করতে দিল না, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দিল না।’
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোন মুখে আপনি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা বলেন? আমরা তো আপনাদের ক্ষমতায় থাকাকালে বিচারই চাইতে পারিনি।’
আপনি ১৫ আগস্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ চান?
বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার বিষয়ে আওয়ামী লীগ যে অভিযোগ করে আসছে, তার জবাবে বিএনপি যে বক্তব্য দিয়ে আসছে, তা নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হয়ে জিয়াউর রহমানের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে মির্জা ফখরুলকে কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃতি খুনিদের তাহলে কে নিরাপদে বিদেশে যেতে দিল? ফখরুল সাহেব, আপনি প্রমাণ চান ১৫ আগস্টের সংশ্লিষ্টতার? কীভাবে তাহলে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পালাল। কে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিল? বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরির ব্যবস্থা করল কে?