ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর স্ত্রীর জন্য হেফাজত নেতাদের দোয়া পড়ানো নিয়ে আলোচনা চলছে জেলায়। সেই আয়োজনে সংসদ সদস্যের কোনো স্বজন উপস্থিত না থাকলেও আওয়ামী লীগের একজন নেতা তাতে অংশ নেন।
গত মার্চে শহরে হেফাজতের তাণ্ডবের সময় মোকতাদির চৌধুরী হেফাজতের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলে ধর্মভিত্তিক সংগঠনের নেতারা রাখেন আপত্তিকর বক্তব্য। এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ‘সন্ত্রাসের গডফাদার’ বলা থেকে শুরু করে তিনি ও তার কোনো স্বজন মারা গেলে জানাজা না পড়ানোরও ঘোষণা দেন হেফাজত নেতারা।
তবে পাঁচ মাস যেতে না যেতেই মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের কান্দিপাড়ার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা মসজিদের দ্বিতীয় তলায় সংসদ সদস্যের স্ত্রী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুনের জন্য দোয়ার আয়োজন করলেন সেই নেতারাই।
গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে যারা তাণ্ডব চালায় তারা এই মাদ্রাসা থেকেই মিছিল নিয়ে এসেছিল। শুরুতে অস্বীকার করলেও গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ২০ ছাত্রকে বহিষ্কারও করে।
জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার মাদ্রাসার অনেক শিক্ষকই জেলা হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন পদপদবিতে রয়েছেন। মূলত তারাই জেলা হেফাজতের কর্ণধার।
দোয়া শেষে মাদ্রাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে বসেন মাদ্রাসার শিক্ষক ও হেফাজত নেতারা। তবে ওই সময় তেমন কোনো আলোচনা করেননি তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া তাণ্ডবে সময় স্থানীয় প্রেস ক্লাবেও হামলা হয়েছিল। হামলা হয় প্রেস ক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির ওপর। একপর্যায়ে হেফাজতের কোনো সংবাদ প্রচার না করার মতো ঘোষণা দেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
দোয়া অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আইনজীবী মহিউদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিমসহ জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মোনাজাত করেন জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (মুহতামিম) ও কেন্দ্রীয় হেফাজতে ইসলামের এক নম্বর সদস্য মুফতি মো. মোবারকুল্লাহ।