নাটোরের বড়াইগ্রাম থেকে তিন দিন আগে অপহৃত এক শিশুকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, ঢাকার বাড্ডাতে সোমবার রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। তবে অপহরণকারী পালিয়ে যান।
এর আগে ২১ আগস্ট শিশুটি অপহৃত হয়। পরদিন থানায় অভিযোগ করেন তার বাবা। পরে এটি মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। ওই দিনই সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া শিশুর নাম আলহাজ প্রামানিক। আট বছর বয়সী আলহাজ বড়াইগ্রাম উপজেলার বাগডোব গ্রামের আক্তার প্রামানিকের ছেলে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম কামরুল ইসলাম। তিনি আলহাজের প্রতিবেশী মামা ও একই এলাকার বাসিন্দা।
নাটোরে কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২১ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে আক্তার প্রামানিক ভ্যান মেরামত করতে স্ত্রীকে নিয়ে বাগডোব বাজারে যান। এ সময় তাদের ছেলে বাড়ির সামনে খেলাধুলা করছিল। আধা ঘণ্টা পর বাড়ি ফিরে ছেলেকে আর খুঁজে পাননি।
পরদিন ২২ আগস্ট সকাল সাতটায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ফোন করে আলহাজকে ফিরে পেতে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এর পরপরই বড়াইগ্রাম থানায় অপহরণের অভিযোগ করেন আক্তার প্রামানিক। শিশুকে উদ্ধার করতে জেলা পুলিশ পাঁচটি টিম গঠন করে মাঠে নামে। রাত ১০টায় সন্দেহভাজন কামরুল ইসলামকে জেলার লক্ষ্মীকোল বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, অনেক আগে নাটোর জেলা কারাগারে থাকাকালে বগুড়ার রুবেল হোসেনের সঙ্গে কামরুলের পরিচয় হয়। দ্রুত ধনী হতে তারা অপহরণ করার চিন্তা করে। পরিকল্পনামাফিক চকলেটের প্রলোভন দিয়ে চাচাতো ভাগিনা আলহাজকে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কারে তুলে নেয় কামরুল। পরে হাটিকুমরুল সড়কে এসে তাকে রুবেলের হাতে তুলে দেয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে কামরুলকে আটকের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়ায় রুবেলের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি ঢাকায় রুবেলের ঠিকানা পুলিশকে জানান। পরে সোমবার রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে রুবেলের বাসা থেকে আলহাজকে উদ্ধার করা হয়। তবে রুবেল পালিয়ে যান।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, রুবেলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আলহাজকে তার পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার কামরুলকে আজ বেলা ২টায় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক তানযীম আলম তাবাসসুম।