বরিশালে জাতীয় শোক দিবসের পোস্টার-ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখোমুখি অবস্থানকে ‘ভুল-বোঝাবুঝি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলেছেন, এমনটা নতুন কিছু নয়।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বরিশালের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেন। তাদের সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝি হতেই পারে। এটা সব সময় হয়ে থাকে। এটা নতুন কিছু নয়।’
ব্যানার অপসারণ নিয়ে গত বুধবার রাতে বরিশাল সদরের ইউএনও মুনিবুর রহমানের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের কথা-কাটাকাটি হয়।
প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ সময় ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।
এ সময় আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন আহত হন।
সংঘর্ষের পর সদর ইউএনওর কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আবার ইউএনওর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের এক বিবৃতিতে বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর গ্রেপ্তার দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও তার অনুসারীদের ‘দুর্বৃত্ত বাহিনী’ উল্লেখ করা হয়েছে, মেয়রকে ‘অত্যাচারী’ বলা হয়েছে।
প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সংগঠন যে ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে, তা নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা চলছে।
অ্যাডমিন অ্যাসোসিয়েশনের এই বিবৃতিতে প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের সুসম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে বলে জানায় বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ। এই বিবৃতিকে ‘চটজলদি’ হিসেবে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অবস্থান প্রসঙ্গেও কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জানান, খুনিদের দুয়েকজনের অবস্থান নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, ‘যাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে তাদের দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। ঘাতকরা চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর রক্ত দেশ থেকে মুছে ফেলতে, কিন্তু তাদের সে চক্রান্ত সফল হয়নি। তাই তো জীবিত মুজিবের চেয়ে মৃত মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী।’