বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাঁস-মুরগির কলেরা: ৩০ টাকার ভ্যাকসিন ১৭০ টাকা

  •    
  • ২১ আগস্ট, ২০২১ ১৪:০৩

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা বলেন, ‘সরকারি ভ্যাকসিন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি অবৈধ। ভ্যাকসিনের সংকুলান হলে কাউকে অতিরিক্ত দামে ভ্যাকসিন বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়নি।’

কক্সবাজারের রামুতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি দামে হাঁস-মুরগির কলেরা ভ্যাকসিন বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় হাঁস-মুরগির খামারিদের অভিযোগ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অফিস সহকারী মনতোষ সাহা ডাক কলেরার ৩০ টাকা মূল্যের সরকারি ভ্যাকসিন বিক্রি করছেন ১৭০ থেকে ২০০ টাকায়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অফিসে বেশির ভাগ খামারি সরাসরি কলেরার ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। বেশির ভাগ ভ্যাকসিন চলে যাচ্ছে ঔষধের দোকানগুলোতে।

এসব অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে ডাক কলেরার ভ্যাকসিন কিনতে প্রতিবেদক ক্রেতা সেজে উপস্থিত হন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে।

অফিস সহকারী মনতোষ সাহা এসেই জিজ্ঞেস করলেন ৩০টি কলেরা ভ্যাকসিনের জন্যে এসেছেন কি না? হ্যাঁ জবাব দিলেও কোনো লাভ হলো না।

হ্যাঁ বলার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে আরও দুজন উপস্থিত হতে দেখা গেল উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে। ওই দুজনই মূলত ৩০টি ভ্যাকসিনের অগ্রিম অর্ডার দেয়া আসল ব্যক্তি।

জরুরি প্রয়োজন জানিয়ে তাদের কাছ থেকে ৩০টি ভ্যাকসিন কিনতে চেয়েও পাওয়া গেল না। তবে অফিস সহকারী মনতোষ সাহা জানালেন পরের দিন ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

ভ্যাকসিন রহস্য জানতে মনতোষ সাহার পিছু নেয়া হলো। কিছু দূর যেতেই দেখা গেল, রামু উপজেলা পরিষদের সামনে ঐশী স্টোর নামের একটি মুদি দোকান থেকে মনতোষ সাহা একে একে ভ্যাকসিন বের করে দিচ্ছেন মোটরসাইকেলে আসা দুই যুবককে। তারা ৩০টি ১০০ মিলি কাচের বোতলের ডাক কলেরার ভ্যাকসিন নিয়ে গেল।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রামুর বিভিন্ন ভেটেরিনারি ওষুধের দোকানে উচ্চ মূল্যে পাইকারি দামে সরকারি বিভিন্ন ওষুধ সাপ্লাই করে চক্রটি।

পরদিন মনতোষ সাহার কথামতো উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলেন প্রতিবেদক। ভ্যাকসিনের জন্য মনতোষ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দোতলায় যেতে বারণ করে নিজেই উঠে পড়লেন। সেখানেই রাখা হয়েছে সরকারি ভ্যাকসিন।

কী পরিমাণ হাঁস-মুরগির কলেরার ভ্যাকসিন মজুত আছে তা জানতে আমরা অবাধ্য হয়েই দোতলায় উঠি প্রতিবেদক ও সঙ্গে থাকা আরও দুজন। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, স্বল্পতার অজুহাতে বেশি দামে বিক্রি হওয়া সরকারি কলেরা ভ্যাকসিনের প্রায় ১০ কার্টুন একটি বদ্ধ রুমে রাখা আছে।

আর সেখান থেকেই ৩০ টাকা মূল্যের হাঁস-মুরগির ছয়টি সরকারি ভ্যাকসিন প্রতিবেদককে দেয়া হলো ১৭০ টাকা করে এক হাজার টাকায়।

পরে দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে অফিস সহকারী মনতোষ সাহা বলেন, ‘প্রতিটি ভ্যাকসিনে আমরা পাই ২০ টাকা মাত্র। কালোবাজারে না আনলে ৫০০ টাকা দিয়েও ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে না।’

নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত মূল্যে ভ্যাকসিন বিক্রির বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুপেন চাকমার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। অভিযোগের খোঁজখবর নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা বলেন, ‘সরকারি ভ্যাকসিন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি অবৈধ। ভ্যাকসিনের সংকুলান হলে কাউকে অতিরিক্ত দামে ভ্যাকসিন বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান জিনাত।

এ বিভাগের আরো খবর