কক্ষে তালা দেয়ার ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিজে কোনো ব্যবস্থা নেবেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। বলেছেন, এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমার ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনই ব্যবস্থা নিতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মনে করে তাহলে তারা তাদের মতো কাজ করবে।’
আফগানিস্তানের ঘটনায় একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাপ্রবাহের বিষয়ে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানান আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, ‘আমি কেমন তা আমার ছাত্ররা জানে। আমার তাদের বিবেকবোধের উপর আস্থা আছে। রাজনৈতিক কারণে তাদের হয়ত অনেক কিছুই করতে হয়। তবে এই কারণে তাদের প্রতি আমার ভালোবাসা কমে যাবে না।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার পর দেশটি ছাড়তে জনগণের মরিয়া চেষ্টা, বিমানে ঝুলে থাকা দুই জন ছিটকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় আসিফ নজরুলের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস সম্প্রতি ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
তিনি লেখেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কাবুল বিমানবন্দর ধরনের দৃশ্য বাংলাদেশেও হতে পারে।’
১৮ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা মারার পাশাপাশি তার বিচার চেয়ে নানা ফেস্টুন সাটিয়ে দেয় ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন আসিফ নজরুলের মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানায়, নইলে তাকে পেটানোর হুমকি দেয়া হয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোতাহার হোসেন ভবনে আইন বিভাগের চেয়ারম্যানের ১২৩ নম্বর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
তালা লাগানোর পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কক্ষের দরজায় বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ফেস্টুনও সাটিয়ে দেয়। এসবে লেখা ছিল, ‘জঙ্গিবাদের মদদদাতা এবং দেশদ্রোহী আসিফ নজরুলের বিচার চাই।’
অধ্যাপক আসিফ নজরুলের প্রতীকী কুশপুত্তলিকা দাহ করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ছবি: নিউজবাংলা
এরপর আসিফ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেয়া চিঠিতে তালা ভাঙার অনুরোধ করেন। বিকেল সোয়া পাঁচটায় তার কক্ষে ঝুলানো সেই তালা ভাঙা হয়।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক জায়গা। এটি মিছিল স্লোগানের জায়গা। আসিফ নজরুল উনি আমাদের বিভাগীয় চেয়ারম্যান। উনাকে এবং প্রক্টরকে সমন্বয় করে কী কী ঘটেছিলো তথ্যগুলো নিতে বলেছি। প্রক্টর স্যার বিষয়টা দেখছেন।’
তালা দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হওয়ার চিন্তা আছে কি না জানতে চাইলে প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘দেখি, আমরা একটা স্টেপে যাচ্ছি৷ যখন যেটা হবে আপনাদের জানানো হবে।’